ভাঙড় : ভাঙড় আর সন্ত্রাস। পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে কার্যত সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। বেলাগাম হিংসার ছবি দেখা গেছে গোটা ভোট পর্ব জুড়ে। বারবার নাম উঠেছে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের (Arabul Islam) বিরুদ্ধে। এবার সেই আরাবুলের পঞ্চায়েত পোলেরহাট ২ হাতছাড়া হল তৃণমূলের। পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিল আইএসএফ-জমিরক্ষা কমিটির জোট।


পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক অশান্তির কারণে প্রায় প্রতিদিন শিরোনামে উঠে এসেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। মনোনয়ন পর্বে একদিনে ২ তৃণমূল কর্মী ও ১ ISF কর্মীর মৃত্য়ু হয়েছে। দফায় দফায় হয়েছে তৃণমূল ও ISFএর সংঘর্ষ ! মুড়ি মুড়কির মতো পড়েছে বোমা, চলেছে গুলি। এই ক'দিন ভয়ে কার্যত কাঁটা হয়ে থেকেছেন বাসিন্দারা। এই ঘটনার ১১ দিন পর ভাঙড়বাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান আরাবুল-পুত্র হাকিমুল ইসলাম (Hakimul Islam)।


বামনঘাটায় দলীয় এক প্রচার সভায় আরাবুলের উপস্থিতিতেই হাতজোড় করে হাকিমুল বলেন, 'ভুল হয়েছে। আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে ভোট দিন। আগামী পাঁচ বছর উন্নয়নের কাজ করব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। কথা রাখতে না পারলে, পাঁচ বছর পর আর ভোট চাইতে আসব না।' ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। কিন্তু, তাঁর শেষ ক্ষমাপ্রার্থনার উপর যে পোলেরহাট  ২-এর মানুষ ভরসা রাখতে পারেনি, তা এদিন ভোটের ফলেই প্রমাণ। কারণ, ভোট পর্বে উত্তপ্ত হয়েছে এই পোলেরহাট ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতও। এখানকার নির্দল প্রার্থী নুরজাহান বিবিকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠে, নির্দল প্রার্থীর বাড়িতে চড়াও হয় শাসক-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। নির্দল প্রার্থীকে কোপানোর পাশাপাশি, তাঁর আত্মীয়দের মারধর করা হয়।


শুধু তা-ই নয়, পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে ভাঙড়ে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা নিয়ে আরাবুল ইসলামকে প্রশ্ন করতে গেলে কার্যত তেড়ে যান তাঁর সমর্থকরা। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা মেজাজ হারিয়ে সরিয়ে দেন এবিপি আনন্দর-র বুম। ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে কখন ব্যবস্থা নেবেন, জানতে চাওয়া হয়েছিল। যার উত্তরেই মেজাজ হারান আরাবুল । রেগে গিয়ে আরাবুল (Arabul Islam) বলেন, 'আপনি বাজে কথা বলার চেষ্টা করছেন কেন ? যান না বলছি তো পরে বলব...' যারপরই এবিপি আনন্দর-র বুম সরিয়ে দেন তিনি। এর পর তৃণমূল নেতার সমর্থকরা ঘিরে ধরেন ক্যামেরা। ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়।


এদিন অবশ্য মেজাজ না হারিয়ে আরাবুল বলেন, "আমার বুথে আমি জিতেছি। পোলেরহাটের অন্যান্য বুথে হেরেছি। ৫, ৭, ১০ ভোটে হেরেছি। আমাদের সাত জন প্রার্থী হেরেছেন ৫ থেকে ১৫ ভোটের মধ্যে। এই অবস্থা হতেই পারে। কী আছে ! " 


আরও পড়ুন ; মনোনয়নের শেষদিনে তিন-তিনটি প্রাণহানি, ১১ দিন পর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন আরাবুল-পুত্র


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial