কলকাতা : পদে বসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রাম বাংলার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন। মনোনয়নের দিনক্ষণে অপর্যাপ্ত সময়ের অভিযোগ তখন থেকেই উঠেছিল। আর পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে দাঁড়িয়ে যাঁর বিরুদ্ধে চড়া সুরে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা। ভোট ঘোষণার দিনে রাজ্য পুলিশে আস্থা রাখার বার্তা দিলেও কলকাতা হাইকোর্টের কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্দেশের পর অবশ্য আদালতের আদেশ মেনে চলার বার্তাই দিলেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (Rajiva Sinha )।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে গোটা রাজ্যেই পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। যে নির্দেশের পর আলোচনায় ঘুরছিল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার জল্পনা। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বাহিনী-নির্দেশ দেওয়ার মাঝে যে বার্তাও দিয়েছিল। যদিও সেই রাস্তায় না হেঁটে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই এগোবে, সেটা বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যের নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার। বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস ছাড়র পথে কমিশনার রাজীব সিনহা বলেছেন, 'আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, আমরা তা মেনে চলব।' কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে এগোনোন বার্তা দিলেও রাজ্য সরকার কি উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়ে ভাববে ? আপাতত সেটাই দেখার।


প্রসঙ্গত, ২০১৩-র পুনরাবৃত্তি ২০২৩-এ। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) করানোর নির্দেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রদান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু স্পর্শকাতর এলাকা নয়, গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেয়েছে কমিশন-রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় যে আদালত অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, সেটাও স্পষ্ট করে দেয় হাইকোর্ট।


আদালত জানিয়েছে, 'আগের নির্দেশের পর থেকে এখনও কোনও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করেনি কমিশন, স্পর্শকাতর এলাকার মূল্যায়ন বা চিহ্নিতকরণও করতে পারেনি কমিশন'। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, আরও অপেক্ষা করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। হাইকোর্টের মন্তব্য, নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ফেলে রাখার জন্য নয়। প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর পরামর্শ কমিশনকে দিয়েছিল আদালত। পাশাপাশি হাইকোর্ট জানিয়েছিল, স্পর্শকাতর এলাকার পাশাপাশি যে যে এলাকায় রাজ্য পুলিশের পরিমাণ কম, সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের জন্য। 


কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের খরচ কেন্দ্র বহন করবে বলেই সাফ জানিয়ে, স্পর্শকাতর এলাকা বেছে কেন্দ্রের কাছে আবেদনের বার্তা দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে মাঝে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কমিশনের তরফে সেরকম এলাকা বেছে নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন তো দূরে থাক, বরং বাহিনী নিয়োগ প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ পুর্নর্বিবেচনার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য ও কমিশন। আর যে পদক্ষেপেই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় আদালত। প্রয়োজনে গোটা রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর সেই নির্দেশই দিল আদালত।


আরও পড়ুন- গরম কবে যাবে ? বৃষ্টি কবে হবে ? শেষমেশ স্বস্তির দিনক্ষণ জানাল আবহাওয়া দফতর