দীপক ঘোষ, কলকাতা: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল। রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কমিশনকে চিঠি। সরেজমিনে সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় বারবার যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এবার তাঁকেই নিশানা করে কমিশনে গেল তৃণমূল।


রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, 'ভোট সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে তদন্ত করতে পারেন না রাজ্যপাল।' রাজ্যপালের ভূমিকাকে এক্তিয়ার-আইন বহির্ভূত বলে অভিযোগ তৃণমূলের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কমিশনকে চিঠি রাজ্যপালের। তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন, 'কমিশন পরিচালিত ভোট নিয়ে অবাঞ্ছিত বিবৃতি দিচ্ছেন রাজ্যপাল। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যপাল।' পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নামে রাজ্যপালের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তৃণমূলের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙঘনের অভিযোগ তৃণমূলের।


এই অভিযোগে নাম জড়ানো হয়েছে বিজেপিরও। বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যপালের সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, 'কীভাবে রাজ্যপালের সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারে বিজেপি?'। ভোটের আবহে বারবার হিংসার ঘটনা ঘটায় বারবার কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হিংসার ঘটনায় রাজভবনে পিস রুমও তৈরি করা হয়েছে। কখনও পুলিশকে তলব করেছেন। কখনও বিডিওর থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন। এই ঘটনাগুলিকেই নিশানা করেছেন তৃণমূল। 'সরকার-কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল। রাজ্যে সমান্তরাল সরকার পরিচালনার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল।', রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। ফলে কার্যত নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধেই কমিশনের অভিযোগ করল তৃণমূল। এর আগেও একাধিকবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূলের একাধিক নেতা-বিধায়ক। নানা ভাবে রাজ্যপালকে বিঁধেছেন তৃণমূল নেতারা। সেটাকেই কার্যত দলীয় সিলমোহর দেওয়া হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। দলের তরফে চিঠি দিয়ে কমিশনকে জানানোর মাধ্য়মেই রাজ্যপালকে নিয়ে দলীয় অবস্থানও তৃণমূল এবার স্পষ্ট করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যে নির্বাচনের যাবতীয় দায় ও দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের উপর। তিনিই সব সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেই জায়গায় রাজ্যপাল যেমন বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, নানা লোকের সঙ্গে কথা বলছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের থেকে নালিশ শুনছেন- এই বিষয়টি ভাল ভাবে নিচ্ছে না তৃণমূল।

এর আগে একাধিকবার রাজ্যপাল রাজ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার বার্তা দিয়েছেন। এদিনই বাসন্তীতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি রাজ্যপাল। তারপরে ফোন করে ক্যানিং গেস্ট হাউসে ডেকে নিহতের মেয়ে, যিনি নিজেই তৃণমূল প্রার্থী, তাঁর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। এর আগে কোচবিহারেও সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সন্ত্রাস কবলিত ভাঙড়, ক্যানিংয়ে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।


আরও পড়ুন: 'দেউচা পাঁচামিতে ১ লক্ষ মানুষের কাজ', অনুব্রত-গড়ে ভোট-আশ্বাস মমতার