কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত। কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে রজ্য নির্বাচন কমিশন। বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা (Rajiv Senha)। এমনকি নিয়োগে সায় দেওয়ার পরেও, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Annada Bose) রাজীবের জয়নিং রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে ফেরত পাঠিয়েছেন নবান্নে (Nabanna)।
রাজীবের পদে থাকা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে
তার পর থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাজীবের পদে থাকা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে (Panchayat Elections 2023)। পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর ইনিংস কি শেষ, উঠছে প্রশ্ন। কিন্তু রাজ্যপাল চাইলেই রাজীবকে পদ থেকে সরাতে পারবেন না, তার জন্য ইমপিচমিন্ট বা অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে বলে মত আইন বিশেষজ্ঞদের।
এবিপি আনন্দে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন বিশিষ্ট আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহ রায়। তিনি বলেন, "রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজীব সিন্হার নামে সম্মতি দিয়েছেন। এখন তিনি যদি নিয়োগপত্র বা জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ না-ও করেন, তাহলেও রাজীবকে সরাতে গেল ইমপিচমেন্ট নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া, নির্বাচন কমিশনার যদি নিজে পদত্যাগ করেন, তাহলে হতে পারে। এছাড়া, এই মুহূর্তে রাজীব সিন্হাকে সরানোর আর কোনও উপায় নেই।"
আরও পড়ুন: Meera Pandey: 'তৃণমূলস্তরে ঝামেলা হয়ই, সবসময় ঠিক হয় না অভিযোগ, কমিশনকেও সময় দিতে হবে', বললেন মীরা
তবে তাঁর পদে থাকা নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, রাজীব নিজে এ ব্যাপারে নির্বিকার। রাজ্যপালের জয়নিং রিপোর্ট গ্রহণ না করা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানিয়ে দেন, এমন কোনও তথ্য নেই তাঁর কাছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব।
রাজীবের জয়নিং রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান রাজ্যপালের
এ ব্য়াপারে যদিও মুখ খুলেছেন তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, "নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, স্বতন্ত্র সংস্থা। ভারতের গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব তার উপর। প্রধান বিচারপতি যে যে উক্তি করেছেন ,তা অনভিপ্রেত এবং আইনে তার কোনও সমর্থন নেই।" যদিও জয়প্রকাশের মন্তব্য আদালত অবমাননার সমান বলে মত বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের।
এ দিকে রাজীবর জয়নিং রিপোর্ট খারিজ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, রাজ্যপালের পদক্ষেপে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল না। বাংলায় এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবেন এটাই কাম্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।