নয়াদিল্লি: ১৯৯১ সালে অভিনয় জগতে পদার্পণ। 'কাল সন্ধ্যা' (Kaal Sandhya) ছবির হাত ধরে অভিনয়ে পা রাখেন বলিপাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী (Ashish Vidyarthi)। সেই থেকে একের পর এক দুর্দান্ত চরিত্রে অভিনয়, কখনও মুখ্য চরিত্র, কখনও সহ অভিনেতা হিসেবে আবার অনেক সময়েই খল নায়কের (negative roles) চরিত্রে। এবার, প্রবীণ বয়সে এসে সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বসমক্ষে কাজ চাইলেন অভিনেতা। আসলে সকলের জন্য বার্তা দিলেন নিজের পোস্টের মাধ্যমে। বুধবার দীর্ঘ পোস্টে কী বললেন অভিনেতা?
'আমি কাজের জন্য রাজি', পোস্টে কী বার্তা আশিস বিদ্যার্থীর?
সম্প্রতি সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন বলিপাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী। বয়স প্রায় ষাটের কোঠায়। এই বয়সে ফের বিয়ে করার জন্য কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তবে সব সমালোচনার খুব সুচারু পদ্ধতিতে উত্তরও দিয়েছেন তিনি। এবার ফের তাঁর পোস্টে শোরগোল। কী এমন লিখলেন অভিনেতা?
বুধবার একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন আশিস বিদ্যার্থী। সেখানে তিনি লেখেন, 'আমি নতুন কাজের জন্য তৈরি... এবং চিরকালই থাকব! আমাদের কাজ আমাদের হয়ে কথা বলবে, আমাদের পরিচয়ের অংশ হয়ে, আমাদের পুরো পরিচয় নয় কিন্তু যার জন্য আমরা গর্বিত হব। আমরা আমাদের সমস্ত গৌরবময় বছর, আমাদের যৌবন, নিজেদের জন্য এবং আমাদের উপর নির্ভরশীলদের জন্য একটি ভাল ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য কাজ করি। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলি নিয়ে কথা বলতে কেন আমরা লজ্জা পাব, বা কেন এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজেদের ছোট মনে করব?' কিন্তু হঠাৎ এই নিয়ে কেন কথা বললেন তিনি?
এদিনের পোস্টে আশিস লেখেন, নিজের অভিনীত চরিত্র নিয়ে তিনি একাধিক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এমনকী নিজের নেতিবাচক চরিত্রগুলি নিয়ে কথা বলতেও কুণ্ঠা বোধ করেছেন। তবে এখন, কর্মজীবনের এতগুলো বছর কাটিয়ে তিনি যে একেবারেই আর নিজের কাজ নিয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন না সে কথাও জানান। এদিনের লম্বা নোটের সঙ্গে ভাগ করে নেন তাঁর কিছু বিখ্যাত কাজের ছবিও।
অভিনেতা শুরু করেন তাঁর কর্মজীবনের প্রথম দিকের গল্প বলে। 'আমার কাছে খুব পরিষ্কার ছিল যে আমি, আমার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ও সহযোগী, তাঁদের এমন একটা জীবন দিতে চাই যা তাঁরা আগে কখনও পাননি। তার জন্য কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। তাই আমি এমন চরিত্রেও অভিনয় করতে থাকি যেমন হয়তো আমি কখনও চাইনি। তেমন কাজের সঙ্গেই আসে ঘৃণা, নেতিবাচক সমালোচনা, মন্তব্য এবং অস্বস্তিকর মন্তব্য যা কেউই নিজের সম্পর্কে শুনতে চাইবে না।' তখন নিজের কাজ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে কুণ্ঠা বোধ করতেন অভিনেতা। কারণ তাঁর মতে, অনেকেই খল চরিত্রে অভিনয় করে গর্বিত হন না। কিন্তু জীবন গুছিয়ে নিতে কাজ তাঁকে করে যেতেই হবে, সেই উপলব্ধি ছিল তাঁর। একইসঙ্গে অভিনেতার কথা, 'জীবন বড় শিক্ষক, এবং আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের চতুর হতে শেখায়। যতই আমি কাজের মাধ্যমে প্রশংসিত হই না কেন, নেতিবাচক মন্তব্য আসতেই থাকে। কিন্তু আজ আমি নিজের কাজ নিয়ে গর্বের সঙ্গে কথা বলি, তা অভিনয় জগতের হোক বা তার বাইরের।' নিজের কাজ নিয়ে কথা বলতে গর্ব বোধ করেন তিনি, তা সে কাজ ছোট হোক বা বড়। যে কাজই হোক, তাতে নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছেন তিনি, গর্ব তো হওয়ারই কথা! কেউই সেই কাজকে ছোট করার ক্ষমতা রাখে না, কারণ আশিস বিদ্যার্থীর কথায়, 'একমাত্র আপনিই ঠিক করতে পারেন আপনার কাজের দাম।'
আরও পড়ুন: Business Trip: কর্মসূত্রে প্রচুর বাইরে যেতে হয়? নজরে থাকুক এই বিষয়গুলি
তাঁর বার্তা সকল অভিনেতার জন্য, সর্বোপরি তাঁর এই বার্তা সকল মানুষের জন্য। আমরা যে যাই করি না কেন, অন্য কারও সাধ্য নেই তাকে ছোট করে! সবশেষে অভিনেতা লেখেন, 'তাই নেতৃত্ব দিন এবং নির্ভয়ে বাঁচুন, বিশ্বের সঙ্গে আপনার আশ্চর্যজনক কাজ ভাগ করুন! যা করছেন তা নিয়ে গর্ববোধ করুন, অন্য যে যা খুশি বলুক।'
এবিপি আনন্দ এখন টেলিগ্রামেও, ক্লিক করুন এই লিঙ্কে
https://t.me/abpanandaofficial