আশাবুল হোসেন, শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে, ভোটে দাঁড়ানো নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে, দলে ফেরার দরজা বন্ধ (Panchayat Elections 2023)। কালীঘাটের বৈঠকে কড়াবার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভোট প্রচারে নামবেন শীর্ষ নেতৃত্বের ৫০ জন নেতা-নেত্রী। ভাঙড়ে সওকত মোল্লার সঙ্গে দায়িত্ব দেওয়া হল সব্যসাচী দত্তকেও।   


পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে যাতে দলের অন্দরে কোনও দ্বিমত না থাকে, তার জন্য তৃণমূলে নবজোয়ার যাত্রায় গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি চালু করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু,সেখানেও যেমন জেলায় জেলায় তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে, ঠিক তেমনই পঞ্চায়েত ভোটেও রাজ্যের শাসকদলের কাছে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।

টিকিট না পেয়ে অনেকেই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেছেন। এমনকি, তাঁদের হয়ে আবার মুখ খুলেছেন তৃণমূল বিধায়কদেরই একাংশ। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুব কবীর প্রকাশ্যেই বলেছেন, "আমি প্রার্থী দিয়েছি। যদি দলীয় প্রতীক না পাই, তাহলে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তাঁরা।"


আরও পড়ুন: TMC Meeting: নজরে লোকসভা নির্বাচন, পঞ্চায়েত ভোটকে হাতিয়ার করেই ২০২৪-র প্রস্তুতি তৃণমূলের


একই ভাবে রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, "এই ভাবে রাজনীতি হলে মুর্শিদাবাদে তৃণমূল খুব খারাপ জায়গায় যাচ্ছে।  খারাপ রেজাল্ট হলে কিন্তু মমতা-অভিষেক ব্লক সভাপতিদের ধরবেন না, আমাদের ধরবেন।" এই প্রেক্ষাপটেই শনিবার কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে কড়াবার্তা দিলেন মমতা।


এ দিন তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, দলের নির্দেশ অমান্য করে যাঁরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে, চিরকালের জন্য দলে ফেরার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সাংবাদিক বৈঠক করে নেত্রীর সেই বার্তা সর্বসমক্ষে তুলে ধরেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

মনোনয়ন পর্বে টানা তিন দিন ধরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে দুই তৃণমূল কর্মী এবং এক ISF কর্মীর।সূত্রের খবর, কালীঘাটের বৈঠকে মমতা বলেছেন, ভাঙড়ের আইনশৃঙ্খলা বিষয়টি প্রশাসন দেখছে। তিনি নিজে সব কিছুর রিপোর্ট নেবেন। পাশাপাশি দলের তরফে, ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোট সামলাতে সওকতের সঙ্গে, প্রাক্তন বিধায়ক সব্যসাচীকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


অন্য দিকে পঞ্চায়েত ভোটকে হাতিয়ার করে, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করে দিতে চাইছে তৃণমূল।
এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রথম সারির ৫০ জন নেতা-নেত্রী জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার করবেন। আগামী ২০ জুন থেকে প্রচারে নামবেন তাঁরা।

প্রচারের কৌশল হিসেবে ঠিক হয়েছে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের তালিকা তুলে ধরা হবে। সেইসঙ্গে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে, তৃণমূলকে ভোট দিয়ে পঞ্চায়েতে শক্তিশালী করলে, ২০২৪ সালে দিল্লি থেকে মোদি সরকার সরাবে মমতার দল। যদিও এতে কোনও গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি।