কলকাতা : মনোনয়ন থেকেই শুরু হয়ে ছিল সন্ত্রাস। শুরু হয়েছিল হিংসা। বলি হয়েছেন একের পর একে রাজনৈতিক কর্মী। ভোটের দিন ছবিটা আরও ভয়ঙ্কর হল। দ্বিপ্রহর না পেরোতেই ঝরে গেল ১২ টি প্রাণ। কোচবিহারে খুন হয়ে গেলেন বিজেপি কর্মী। খড়গ্রাম-রেজিনগর-মানিকচক-চাপড়া, বাসন্তী, কাটোয়া, উত্তর দিনাজপুরে খুন হলেন তৃণমূল কর্মী। লালগোলা-আউশগ্রামে সিপিএম, নওদায় কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু ঘটল। কুরুক্ষেত্রের আকার নিল পশ্চিমবঙ্গ। রক্তাক্ত হল বাংলার মাটি। 



  • সকালেই খড়গ্রামে খুন হয়ে যান তৃণমূল সমর্থক। নিহতের নাম সত্তরউদ্দিন শেখ(৫২)। তাঁর ছেলে আবদুল্লা শেখ, কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখ খুনের অন্যতম অভিযুক্ত। এখানেই খুনের বদলা খুনের অভিযোগ তুলছে নিহতের পরিবার।

  • অন্যদিকে , রেজিনগরের ঝিকরায়, এক তৃণমূল কর্মীকে বোমা মেরে খুনের অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।  নিহতের নাম ইয়াসিন শেখ (৫২)। পরিবারের দাবি, রাত ১টা নাগাদ বাড়ির সামনেই তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা মারা হয়।

  • লালগোলায় ভোট-সংঘর্ষে খুন সিপিএম সমর্থক। মৃতের নাম রওশন আলি। অভিযোগ, লালগোলার ময়া ছাতিয়ানি প্রাইমারি স্কুলের বাইরে সংঘর্ষে জড়ান তৃণমূল ও কংগ্রেস কর্মীরা। কংগ্রেস কর্মীদের বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন সিপিএম কর্মী রওশন আলি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 

  • বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯২ নম্বর বুথের ভিতরে বোমাবাজি। ফুলমালঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে এসে বোমার আঘাতে মৃত্যু হল তৃণমূল প্রার্থী রফিয়া ওস্তাগরের দেওর আনিসুর ওস্তাগরের। অভিযোগের তির যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 

  • দিনহাটার ঘুঘুমারি এলাকার নিউ গীতালদহে ১৮৮ নম্বর বুথের বাইরে চলল গুলি। বিজেপি কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 

  • কাটোয়ায় তৃণমূল কর্মী গৌতম রায় খুন। সিপিএমের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ । অভিযোগ কাটোয়ার সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। বুথের বাইরে বার করে এনে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। 

  • নওদার মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাধারি গ্রামে কংগ্রেস কর্মীকে খুনের অভিযোগ। মৃতের নাম লিয়াকত শেখ। অভিযোগ, ভোট দিতে যাওয়ার সময় কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। বাকিরা পালালেও ৬২ বছরের কংগ্রেস কর্মী লিয়াকত শেখ পালাতে পারেননি। বোমার আঘাতে গুরুতর জখম কংগ্রেস কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। 

  • নদিয়ার চাপড়ার কল্যাণদহে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু। আহত আরও ৯ জন তৃণমূল কর্মী। তৃণমূলের দাবি, ভোট দিতে যাওয়ার পথে, কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। তৃণমূল কর্মীদের এলোপাথাড়ি কোপানো হয়।

  • ভোটের সকালে মালদার মানিকচকে ভোটের বলি এক। গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুটোলা গ্রামে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে, বোমা মেরে খুন। নিহত শেখ মালেক তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির আত্মীয়। ভোট শুরুর আগে সকাল থেকে তৃণমূল-কংগ্রেস সংঘর্ষে বোমাবাজি শুরু হয়। গুলিও চলে বলে অভিযোগ। উভয়পক্ষের ৮ জন জখম হন। রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বোমা। ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন ভোটাররা।  

  • উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ায় তৃণমূল প্রার্থীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ। বিদ্যানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেবরা অঞ্চলের ১৯২ নম্বর বুথের প্রার্থী মহম্মদ শাহেনশা। বুথের বাইরে কংগ্রেসের দুষকৃতীরা তৃণমূল প্রার্থীকে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের। আরও ১০-১২ জন তৃণমূল কর্মী আহত হন বলে অভিযোগ।