নয়াদিল্লি: লোকসভার বিরোধী দলনেতা হওয়ার প্রস্তাব রাহুল গাঁধীকে (Leader of Opposition in Lok Sabha)। কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পাস হল এই প্রস্তাব। অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে তৃতীয় দফায় লোকসভায় নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি বিরোধীদের মুখ হিসেবে থাকবেন রাহুল। ১০ বছর পর এবার বিরোধী দলনেতা বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বিরোধীরা, আর রাহুলের কাঁধেই সেই গুরুদায়িত্ব বর্তানো হয়েছে বলে খবর। রাহুলের কাছে সকলের অনুরোধ পাঠানো হয়েছে। ভেবে জানাবেন বলে নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছেন রাহুল। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গন্য হবে। (Rahul Gandhi)


রবিবার তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন মোদি, তার আগে কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়। সেখানেই রাহুলকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে তুলে ধরার প্রস্তাব পাস হয় বলে খবর মিলেছে। এ নিয়ে কংগ্রেসের তরফে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি যদিও। তবে রাহুলকে বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় দেখা যেতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই। এর আগে, আদানি-আম্বানি ইস্যু হোক বা মণিপুর হিংসা, সাম্প্রতিক কালে চাঁচাছোলা ভাষায় যেভাবে সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন রাহুল, তাতে সমর্থকদের মধ্যে থেকেও রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করার দাবি উঠছিল। (Congress Working Committee)


বৈঠকে যোগ দেওয়া শশী তারুরকেও এদিন রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করার সপক্ষে সওয়াল করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, "আমি রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করার পক্ষে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পাস হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ওঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।" কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, "আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে (রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করায়)।"


আরও পড়ুন: Heritage Foods Share: সরকার গঠনের আগেই অ্যাডভান্টেজ চন্দ্রবাবু, পাঁচ দিনে ঘরে তুললেন ৭৭২ কোটি


২০১৪ সাল থেকে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদটি শূন্য পড়ে রয়েছে। কারণ বিজেপি-র একাধিপত্যে গত দু'বছর বিরোধী শিবিরের কোনও দলই সংসদে ১০ শতাংশ আসন পেতে সফল হয়নি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৪৪টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। ২০১৯ সালে লোকসভায় তাদের আসনের সংখ্যা ছিল ৫২টি। এবারে সেই আসন বেড়ে ৯৯ হয়েছে।


লোকসভার বিরোধী দলনেতার ভূমিকা সংসদীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেকিং এবং যৌথ সংসদীয় কমিটির সদস্য হন তিনি। সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন, সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশন, সিবিআই ডিরেক্টর, জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারপার্সন, লোকপাল বাছার যে কমিটিতেও শামিল থাকেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। এবার সেই অধিকার পাওয়া পথে কংগ্রেস। আর সেখানে রাহুল অগ্রভাগে থাকলে, দলও বাড়তি উৎসাহ পাবে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের নেতারা। যদিও রাহুল ঘনিষ্ঠদের দাবি, কোনও পদে থাকার চেয়ে সংগঠনের উপর জোর দিতে চান রাহুল। 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র সাফল্য ধরে রাখতে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছতে আগ্রহী তিনি।