নয়াদিল্লি: আসন সমঝোতা নিয়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ছিলই। কিন্তু দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারিতে আবারও একছাতার নীচে দেখা গেল বিজেপি বিরোধী I.N.D.I.A জোটকে (Rahul Gandhi)। দিল্লির রামলীলা ময়দানে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে জোটের শরিক সবদলকেই দেখা গেল। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের হয়েও সওয়াল করলেন সকলে। আর সেখানে দাঁড়িয়েই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। ৪০০ আসন পারের যে লক্ষ্য নিয়েছে BJP, সেই নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করলেন। (INDIA Bloc Mega Rally)
কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রামলীলা ময়দানের এই সমাবেশকে 'গণতন্ত্র বাঁচাও' নাম দিয়েছে I.N.D.I.A শিবির। রবিবার সেখানে বক্তৃতা করতে গিয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে 'ম্যাচ ফিক্সিং'-এর অভিযোগ তোলেন রাহুল। তিনি বলেন, "আজকাল IPL-এর ম্যাচ চলছে। ম্যাচ ফিক্সিং শব্দটা শুনেছেন তো! অন্য়ায় ভাবে যখন আম্পায়ারের উপর চাপ সৃষ্টি করে, খেলোয়াড় কিনে নিয়ে, অধিনায়ককে ভয় দেখিয়ে যখন ম্যাচ জেতা হয়, তাকে ক্রিকেটের ভাষায় ম্যাচ ফিক্সিং বলা হয়। লোকসভা নির্বাচনের আগেও তাই হচ্ছে। আম্পায়ারও উনিয় চয়ন করেছেন, ম্যাচ শুরুর আগে আমাদের দলের দুই খেলোয়াড়কে গ্রেফতার করে জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি ম্যাচ ফিক্সিং-এর চেষ্টা করছেন। এই যে ৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন, ইভিএম, ম্যাচ ফিক্সিং, সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে এরা ১৮০ আসনও পাবে না।"
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: I.N.D.I.A-র নামটাও আমার দেওয়া, ভোটের পর আমি দেখে নেব: মমতা
নির্বাচনের মুখে কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্য়াকউন্ট থেকে লেনদেন বন্ধ করা নিয়ে এদিন আবারও সরব হন রাহুল। বলেন, "কংগ্রেস দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। আমাগের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের প্রচার চালাতে হবে, মানুষকে পাঠাতে হবে এদিক ওদিক, পোস্টার লাগাতে হবে, তার জন্য টাকা যেখান থেকে খরচ হবে, সেই অ্যাকাউন্টই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ কেমন নির্বাচন? নেতাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, জেলে ঢোকানো হচ্ছে, টাকা ফেলে সরকার ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কেজরিওয়ালজি, সোরেনজিকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এটা গোটাটাই ম্যাচ ফিক্সিংয়ের চেষ্টা। একা নরেন্দ্র মোদি করছেন না, দেশের তিন-চার শিল্পপতি মিলে এই ম্যাচ ফিক্সিং করছেন। কেন হচ্ছে এই ম্যাচ ফিক্সিং? একটাই লক্ষ্য, দেশের সংবিধান যা দেশের দরিদ্র মানুষকে স্বপ্ন দেখার অধিকার প্রদান করেছে, সেই অধিকার কেড়ে নিতে এই ম্যাচ ফিক্সিং।আপনারা পিছু হটলে এদের ম্যাচ ফিক্সিং সফল হয়ে যাবে। আর তার পরই দেশের সংবিধান শেষ হয়ে যাবে।"
যেদিন দেশের সংবিধান থাকবে না, সেদিন ভারতও আর বাঁচবে না বলে জানান রাহুল। তিনি জানান, হুমকি দিয়ে, পুলিশ দিয়ে এই দেশ চালানো যাবে না। এই দেশের সংবিধান দেশের মানুষের কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি, দেশের হৃদস্পন্দন। তিনি বলেন, "যেদিন এই সংবিধান থাকবে না, সেদিন এই দেশও আর থাকবে না। আলাদা আলাদা রাজ্য থাকবে শুধু। এটাই ওদের লক্ষ্য। পুলিশ, সিবিআই, ইডি, আয়কর দিয়ে দেশ চালাতে চাইছে ওরা। সংবাদমাধ্যমকেও কিনে নিতে পারেন, চাপসৃষ্টি করতে পারেন, কিন্তু ভারতের কণ্ঠস্বর রোধ করা যাবে না।" বিজেপির সাংসদ প্রকাশ্যে ৪০০ আসন পার করার পর সংবিধান পাল্টে দেওয়ার কথা বলেছেন বলেও এদিন উল্লেখ করেন রাহুল। দেশকে, সংবিধানকে বাঁচানোর জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে বলেন তিনি।