কলকাতা: রামকৃষ্ণদেবের ( Ramakrishna ) আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রামকৃষ্ণ মিশন ( Ramakrishna Mission ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ ( Swami Vivekananda )। আজ সারা বিশ্বে রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের ২৭৯টি শাখা কেন্দ্র রয়েছে। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবাদর্শে আস্থা রাখেন সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ভক্ত। এ হেন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের সাধুদের একাংশের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্য বিতর্কের ঝড় তুলেছে। তোলপাড় ফেলে দিয়েছে ভক্তমহলে। 


শনিবার তৃণমূল নেত্রী নিশানা করেন রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু-সন্ন্যাসীদের একাংশকে। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ' রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে। শ্রদ্ধা করে। ওদের কাছে একটা হোয়াটসঅ্য়াপ আছে, গ্রুপ। ওদের যারা মেম্বার হয় তাদের নাম, যারা দীক্ষা নেয়। তাদেরকে আমি ভালবাসতে পারি। আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু, রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কোনওদিনও। এটা আমি জানি। তাহলে আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব? কেউ কেউ ভায়োলেট করছে, সবাই নয়।' এই মন্তব্যের পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। 


এই পরিস্থিতিতে  রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক (General Secretary )স্বামী সুবীরানন্দ মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে  বলেন,রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন তাঁর ভক্ত ও  অনুগামীদেরদের কখনওই নির্দেশ দেয় না যে তারা কাকে ভোট দেবে। 


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একটি জনসভায় রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ এবং ইসকনের সঙ্গে  সন্ন্যাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন। বলেন, সাধুদের একাংশ ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ভক্তদের বলে থাকেন। এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় ভক্ত ও রাজনৈতিক মহলে। এই নিয়ে মুখ খোলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। 


মিশনের তরফে রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ  বলেন, 'রামকৃষ্ণ মিশন একটি অরাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা।  সংগঠনের সাথে যুক্ত সন্ন্যাসীরা কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন না। এমনকী তারা তাদের ভোটের অধিকারও প্রয়োগ করেন না। এটি ছিল স্বামীজির নির্দেশ যা আমরা সর্বদা অনুসরণ করি। " তাঁর মতে, ভোট দানের বিষয়টি রামকৃষ্ণ মিশনের অনুগামীরা স্বাধীনভাবে নিজেদের পছন্দের দলকে ভোট দেন। এ বিষয়ে মিশন কোনও প্রভাব খাটায় না। 


স্বামী সুবীরানন্দ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, 'এ বিষয়ে আমরা তাদের পরামর্শ দিই না, আমরা কোনও নির্দেশও দিই না' । তিনি আরও বলেন,এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের একমাত্র লক্ষ্য নিঃস্বার্থ মানব সেবা। আর কিছু নয়। 


আরও পড়ুন : 


রেমাল এখন কি পরিস্থিতিতে ? কেন এমন নামকরণ? মানেই বা কী?