প্রকাশ সিন্হা, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও সুমন ঘরাই, সন্দেশখালি: দলেরই পঞ্চায়েত সদস্য়ের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সন্দেশখালিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা। পুলিশের কাছেও দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু সুরাহা না হওয়ায়, মঙ্গলবার সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন তিনি।


এবিপি আনন্দের প্রশ্নে কী বলেছিলেন তিনি?
পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা তৃণমূল নেত্রী বলেন, '২০ এপ্রিল উনি আমাকে ডাকে বাড়িতে। সেখানে গিয়ে নির্জন বাড়িতে দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে উনি আমার শ্লীলতাহানি করে। কোনওরকমে আমি ভয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। বেরিয়ে এসে আমি ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় থানাতে জানাতে বাধ্য় হই।' তাঁর আরও অভিযোগ, থানায় FIR দায়ের করলেও কোনওরকম পদক্ষেপ হয়নি। অভিযুক্ত ওঁর মতো ঘুরেই চলেছেন। সাজা চেয়েছেন তিনি।


মিটিং-এর নাম করে বাড়িতে ডেকে শ্লীলতাহানি। খোদ সন্দেশখালির তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য়ার এই অভিযোগ। সেটাও তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য়ের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, এই ঘটনা ঘটার পর পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শেষমেশ মঙ্গলবার, ধামাখালির CBI-এর ক্য়াম্প অফিসে এসে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন তিনি। 


মঙ্গলবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য়া যখন CBI-এর ক্যাম্প অফিসে যান, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী ও আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি বলেন, 'পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা এটা উল্লেখ করুন তৃণমূলের। এটা তৃণমূলের। নাহলে আবার বলে দেবে ৫০০ টাকা ২ হাজার টাকা নিয়ে এটা কথা বলতে এসেছে। মহিলাদের তো মান-সম্মান এদের কাছে কিছুই নেই।'


শুধু শ্লীলতাহানির চাঞ্চল্য়কর অভিযোগই নয়, তৃণমূল যখন দাবি করছে, সন্দেশখালিতে নির্যাতনের অভিযোগ, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, তখন বিস্ফোরক দাবিও করেছিলেন সন্দেশখালিরই পঞ্চায়েত সমিতির এই সদস্য়া। এবিপি আনন্দের তরফে তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল, 'সন্দেশখালিতে কী ঘটেছিল? আপনি কী বলবেন?' 


অভিযোগকারী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বলেন, 'এই তো শিবু হাজরা ওনারা তো জেলেই গেছেন। ওদের প্রভাবটা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গেছিল। সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থাই ছিল। ওদের বিরুদ্ধে যদি মুখ খোলা হত, তাদের জীবনহানির আশঙ্কা একটা ছিল। অন্য়ায়টাতো অন্য়ায়ই। অন্য়ায়টা যখন কারও সাথে হয়েছে, সেই অন্যায়ের প্রতিবাদের জন্যই কিন্তু এটা বলার।'


ওই তৃণমূল নেত্রীর স্বামী বলেন, 'সত্যি ঘটনা। এত মহিলারা যে প্রতিবাদ করেছে, বিশেষ করে রেখা পাত্র-সহ যে সমস্ত মহিলারা, তারা তো কোনও দলগতভাবে করেনি। ওরা সাধারণ নারী হিসেবে তাদের উপর যে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে অত্য়াচার হয়েছে, সেই অত্য়াচারের ঘটনা তারা খুলে বলেছে।'


আরও পড়ুন: শিলিগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে হামলায় অবশেষে গ্রেফতার ৩! এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত