সুকান্ত মুখোপাধ্য়ায়, আশাবুল হোসেন ও অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়: মনোনয়ন থেকে নির্বাচন এবং তারপর ফল ঘোষণা (Panchayat Elections 2023)। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগাগোড়াই অশান্তির সাক্ষী থেকেছে ভাঙড় (Bhangar News)। আর এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। ভাঙড়ে যখনই অশান্তি বেধেছে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। আর পরিস্থিতি যখন অপেক্ষাকৃত শান্ত, আচমকা পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। এর নেপথ্য়ে কারণ কী? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে (Bhangar Police)।


পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটে গিয়েছে। হয়ে গিয়েছে ভোটগণনাও। কিন্তু ভাঙড় আছে ভাঙড়েই। বোমা, গুলি, মৃত্য়ুতে ভাঙড় এখনও ভয়ঙ্কর। 
এই প্রেক্ষাপটেই প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ভাঙড়ে অশান্তি কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। কিন্তু বার বার সেই অশান্তি মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে কী করে? পুলিশ-প্রশাসন কী করছে?

গত এক মাসে ভাঙড়ে বারবারই অভিযোগ উঠেছে, শাসক দলকে সুবিধা করে দিতে পুলিশ কখনও নিষ্ক্রিয় থাকে, কখনও সক্রিয় হয়। গত ১৩ জুন মনোনয়ন চলার সময় তৃণমূল-ISF সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাঙড়।  পুলিশের সামনেই মুড়ি-মুড়কির মতো পড়ে বোমা। সেদিন আক্রমণের মুখে পিছু হঠে পুলিশ।


আরও পড়ুন: Panchayat Election Result 2023:গণনার দ্বিতীয় দিনেও এড়ানো গেল না প্রাণহানি, ৩৫ দিন ৪৭ জনের মৃত্যু রাজ্যে

এই মনোনয়ন পর্ব চলাকালীনই ভাঙড়ে দুইজন তৃণমূলকর্মী এবং একজন ISF কর্মীর মৃত্য়ু হয়। ১৫ জুন ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে দুষ্কৃতীরা যখন বোমা-গুলি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে,  পুলিশ ব্যস্ত ছিল সাংবাদিকদের আটকাতে। ১৬ জুন রাজ্যপালের ভাঙড় সফরের সময়ও সেখানে পুলিশ কর্তাদের সেভাবে দেখা মেলেনি। এমনকি, তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখে রাজ্যপালের নিরাপত্তারক্ষীকেই তা সরাতে হয়।

এসব মিটে যাওয়ার পর ১৭ জুন ভাঙড়ে হঠাৎ পুলিশকে তৎপর হয়ে উঠতে দেখা যায়। সকাল থেকে এলাকায় টহল দিতে শুরু করেন পুলিশকর্তারা।
কিন্তু আবার ৮ জুলাই ভাঙড়ে ফিরে আসে গুলি, বোমাবাজি, সংঘর্ষের ছবি, যে অশান্তি থামেনি ফল ঘোষণার পরও। ভোট গণনার মধ্য়েও প্রাণ ঝরেছে ভাঙড়ে।

এই প্রেক্ষাপটে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, পুলিশের এই হঠাৎ সক্রিয়, হঠাৎ নিষ্ক্রিয় ভূমিকার নেপথ্য়ে কারণ কী? ভাঙড়ে প্রশ্নে পুলিশ, রাজনীতি, ভোট, সংঘর্ষ, মৃত্য়ু দেখে দেখে, ভাঙড়ের সাধারণ মানুষের সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে উঠেছে আতঙ্ক। কিন্তু কতদিন এই ভয়ের রেশ নিয়ে বাঁচতে হবে তাঁদের? সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কারও কাছে।