পূর্ব মেদিনীপুর: সিপিএমের পথেই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে বিজেপি। পাঁশকুড়ায় ওসিদের সঙ্গে শুভেন্দু গোপন বৈঠক করেছিলেন বলে অভিযোগ তোলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শেষ দফায় পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটের মুখে সিপিএমের এই অভিযোগ ঘিরেই আপাতত তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
সিপিএমের পর মঙ্গলবার এই একই অভিযোগে নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। তারা অভিযোগ করে, রাজ্য পুলিশের ডিজির নির্দেশেই পাঁশকুড়ায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পাঁচটি থানার ওসি। তৃণমূল অবশ্য এসব অভিযোগকে অসত্য বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সিপিএমের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জেলাশাসকের রিপোর্ট তলব করে সিইও-র দফতর। জেলাশাসক পুলিশ সুপারের কাছ রিপোর্ট নিয়ে সিইও-র দফতরে পাঠিয়েছেন।

তবে সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বনমালী কলেজে পুলিশের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদের বৈঠকের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। কারণ, সেই কলেজ এখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ছাউনি। যেদিন বৈঠক হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তার আগে থেকেই সেখানে ৬ বাহিনী রয়েছে।
যদিও, বিজেপি এই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয়। কমিশনকে চিঠি দিয়ে তাঁরা দাবি জানিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও প্রকাশ করা হোক।


একদিকে সিপিএম-বিজেপি যখন ওসিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর আবার পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অপসারণ দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, পূর্ব মেদিনীপুরে ভোট করাতে কেশপুর থেকে লোক ঢোকাচ্ছে তৃণমূল। আর তা জেনেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এই বিতর্কের মধ্যেই ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার অভিযোগে সবং থানার ওসিকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে কমিশন বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু ভোটের আগে নয়। ভোটের পর পুলিশের ভূমিকাতেও তাঁরা যথেষ্ট কড়া নজর রাখছেন। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে বাঘাযতীন, কসবা, হরিদেবপুরে ভোটের পর বিরোধীদের ওপর হামলার যে অভিযোগ উঠছে, সেক্ষেত্রেও পদক্ষেপের দরজা খোলা রয়েছে।