বীরভূম: অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে, খুন ও ধর্ষণ করা হবে। পুলিশ চলে যাওয়ার পর এভাবেই হুমকি দিয়েছে তৃণমূলের লোকজন। অভিযোগ লাভপুরের আক্রান্ত সিপিএম সমর্থকের স্ত্রী ও মেয়ের। নিরাপত্তাহীনতায় গ্রাম ছাড়লেন তাঁরা। গল্প ফাঁদছে সিপিএম, অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিক্রিয়া অনুব্রত মণ্ডলের।
সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে লাভপুরের কামসুন্দিপুর গ্রামে দফায় দফায় হামলা হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জখম হন বেশ কয়েকজন সিপিএম সমর্থক। রক্তাক্ত অবস্থায় গ্রামে যাঁরা পড়েছিলেন, সেই তালিকায় রয়েছেন এই ব্যক্তিও। যাঁর ছেলে আবার নাসিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে কর্মরত।
আক্রান্ত এই সিপিএম সমর্থকের পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ চলে যাবার পরই গ্রামে আসে তৃণমূলের লোকজন। অভিযোগ প্রত্যাহারের কথা বলে, জখম সিপিএম সমর্থকের স্ত্রীকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগকারী বলেন, মাকে বলল স্বামীকে বল, অভিযোগ তুলে নে, না হলে তোকে খুন করব। মাকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে দেখে ছুটে আসেন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। তাঁর অভিজ্ঞতা হয় আরও ভয়ঙ্কর! অভিযোগকারী বলেন, আমাকে বলল, বাবাকে বল, অভিযোগ তুলতে। না হলে তোকে ধর্ষণ করব। তুই কলেজে যাস, আমরাই সব নিয়ন্ত্রণ করি। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাব।
বুধবার গ্রামে প্রচারে গেলে বিষয়টি জানতে পারেন লাভপুরের সিপিএম প্রার্থী। পরিবারকে নিয়ে তিনি যান বিডিও-র কাছে। দায়ের হয় লিখিত অভিযোগ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাভপুরের বিডিও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতির দাবি, পুরোটাই সাজানো। মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে ভোটের আগে মিথ্যে গল্প ফাঁদছে সিপিএম।
শরীরে গুরুতর আঘাত নিয়ে গৃহকর্তা এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে এদিন গ্রাম ছেড়েছেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। গোপন জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছে সিপিএম সমর্থক এই পরিবারকে।
হামলার ঘটনায়, এদিন দুই তৃণমূল সমর্থকের পাশাপাশি এক সিপিএম সমর্থককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপিএমের অভিযোগ, শাসক দলকে সন্তুষ্ট করতেই তাদের সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার লাভপুরে আক্রান্ত দলীয় সমর্থকদের বাড়িতে যাবেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম।