ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বিজেপির (BJP) পতাকা খুলে ড্রেনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে (TMC) হইচই সিউড়ির (Suri) কুলেরা গ্রামে। পরিস্থিতি এতটাই তেতে ওঠে যে পরে সিউড়ি থানার পুলিশ এসে তা নিয়ন্ত্রণে আনে।
কী ঘটেছে?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাতে কুলেরা গ্রামে বিজেপির পতাকা খুলে ড্রেনে ফেলে দেন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজন কে বিজেপি কর্মীরা ধরে ফেলেন। খবর পেতেই তৃণমূল কর্মীরা চলে আসেন। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। পরে সিউড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশের সঙ্গেও তর্কাতর্কি চলে বিবদমান দুই পক্ষের। পরিস্থিতি অবশ্য পরে নিয়ন্ত্রণে আসে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ধরনের ঘটনা অবশ্য এখন আকছার ঘটছে। এদিনই যেমন ফের অশান্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের দিনহাটা । তৃণমূল-বিজেপি (TMC-BJP) সংঘর্ষে গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় ৬ জন তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি। তাঁদের মধ্যে ১ তৃণমূলকর্মীর মৃত্যু হয়। জখমদের মধ্যে ৪ জন দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি, বাকি ২ জনকে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। গোটা ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে।
তপ্ত দিনহাটা...
এদিন সীমান্তবর্তী জারি ধরলা গ্রামে সংঘর্ষে জড়ায় বিজেপি ও তৃণমূল। ঘটনার জেরে গীতালদহে বাবু হক নামে এক তৃণমূলকর্মীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। আরও পাঁচজন আহত বলে দাবি তৃণমূলের। তাঁদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল ও MJN হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এনিয়ে রাজ্যে গত ১৯ দিনে ১১ জন পঞ্চায়েত-হিংসার বলি হল। দিনহাটার ঘটনায় পুলিশের দাবি, বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতী এনে গন্ডগোল করেছেন স্থানীয় নেতারা। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে নিশানা করেছেন সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া। তাঁর দাবি, গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভেটাগুড়িতে নিজের বাড়িতে ফিরেই বিজেপি কর্মীদের উস্কানি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বিজেপির প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। পরিসংখ্যান বলছে, কোচবিহারে পঞ্চায়েতের মোট আসন ২ হাজার ৫০৭টি। এর মধ্যে ভোটের আগেই ১৫৭-টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এই ১৫৭টি আসনের মধ্যে ৮০টিই দিনহাটায়। অর্থাৎ তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর দিনহাটায় ৫০ শতাংশের বেশি আসন বিনা যুদ্ধেই দখল করেছে তৃণমূল। এর আগে ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। বিনা যুদ্ধে ভোটে জেতার স্বাদ আগেও পেয়েছে তৃণমূল। ২০১৮-র ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে ২০২৩-এও।