পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া:  রবিবার ব্রিগেড ময়দান থেকে লোকসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্যের ৪২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে ভূমিপুত্রেই আস্থা রেখেছে শাসক দল। বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন তালডাংরার বিধায়ক ও দলের জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী। আর এই ঘোষণার পরই ব্রিগেড থেকে ফোন হাতে হনহন করে বেরিয়ে যান, বাঁকুড়ার মাটি কামড়ে পড়ে থাকা অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। তিনি নাকি পার্টির দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ! এরপর এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সায়ন্তিকা জানান, 'তিনি একটু অভিমানী বটে' । 


কিন্তু তাঁর অভিমানকে পাত্তা দিতে নারাজ অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর স্পষ্ট প্রশ্ন, ' অভিমানটা কীসের? দল ঠিক করবে কে প্রার্থী হবে। আমি আছি বলে আমাকে প্রার্থী করে দিতেন মনে হয়? আমি তো এতদিন ধরে দলটা করছি। আমাকে দল মনে করেছে প্রথমে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, MLA, তারপর তো MP। হঠ্ করে তো ছাদে উঠিয়ে নেওয়া যায় না। স্টেপ বাই স্টেপ হয়। আমি পঞ্চায়েত ছিলাম, জেলা পরিষদ ছিলাম। আমি মেন্টর ছিলাম, আমি সভাধিপতি ছিলাম। MLA হয়েছি, এবার MP দিয়েছে আমায়।'


রবিবার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হওয়ার পরে 'অভিমানী' সায়ন্তিকা এবিপি আনন্দকে জানান, 'এতদিন ধরে খেটেছি, তিন বছর ধরে নিশ্চই একটা কিছু ভেবে একটা গোল আমরা সেট করে নিই। যেহেতু আমি সেই চান্সটা পাইনি, অবশ্যই একটু অভিমানি, নিশ্চই একটু খারাপ তো লাগবেই।' 


সেই সঙ্গে জানিয়েও দেন বিজেপি থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন। কিন্তু উত্তর দেননি। দেবেনও না। তবে কেন তাঁকে প্রার্থী করা হল না, তা আগে জানালে ভাল হত। 


২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েই বাঁকুড়া থেকে প্রার্থী হন সায়ন্তিকা। কিন্তু বিজেপির নিলাদ্রি শেখর দানার কাছে পরাজিত হন তিনি। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সায়ন্তিকার ওপর ভরসা না রেখে বর্তমান বিধায়ককে নির্বাচন করেছে দল। অরূপ চক্রবর্তী প্রার্থী হতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সায়ন্তিকা। 


আর তাতেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অরূপ। তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, হঠ্ করে তো ছাদে উঠিয়ে নেওয়া যায় না। সায়ন্তিকার অভিমান পর্বের মাঝেই মঙ্গলবার থেকে প্রচারে নামলেন অরূপ চক্রবর্তী। প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বেশকিছু মন্দিরে এদিন পুজো দেন তিনি।