গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : 'পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট পেতে কোটি কোটি টাকার খেলা হয়েছে।' দু'দিন আগে নিজের দলের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। দুটি পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছিলেন। এবার পঞ্চায়েতের টিকিট বিলি নিয়ে তৃণমূলে আরও বিদ্রোহ।  বিস্ফোরক আরেক বিধায়ক। 



পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে, হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে পরপর জোরাল ধাক্কা খাচ্ছে রাজ্য় সরকার। মনোনয়ন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশ দিচ্ছে আদালত। তার মধ্য়েই পঞ্চায়েত ভোটের ( Panchayat Poll 2023 )  আগে তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়াচ্ছে তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। 


বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, মনোরঞ্জন ব্য়াপারীর পর, এবার, মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। তাঁর দাবি, 'দলের মধ্য়ে গ্রুপবাজি রয়েছে। তাই ৫০-৫০ ভাগ হয়েছে। দল আমার ওপর ভরসা রাখতে পারেনি।' ক্ষোভ উগরে দিয়ে এমনই মন্তব্য় করলেন তণমূল বিধায়ক।

পাশাপাশি, উস্তি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, তথা দলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র মণ্ডলকেও আক্রমণ করেছেন গিয়াসউদ্দিন। তিনি বলেন, 'টিকিট বিলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মানবেন্দ্রকে। যিনি গত পাঁচ বছর রাজনীতি করেননি। মিটিং, মিছিল করেননি। শুধু ব্যবসা করে গেছেন। নিজের স্ত্রীকে প্রার্থী করে অন্য পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতিয়েছেন।' 'গিয়াসউদ্দিন ডিপ্রেসন থেকেই একথা বলছেন।' পাল্টা মন্তব্য় মানবেন্দ্রর।           


আরও পড়ুন


 


দিনকয়েক আগে তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ' আগের চাকরির পেনশন, গ্র্যাচুইটি পাই না, তাই ছাড়তে পারছি না। বিধায়ক পদ ছাড়লে খাব কী? পেনশন শুরু হলে বিধায়ক পদ থেকেও সরে দাঁড়াব। 
একইসঙ্গে তাঁর খেদোক্তি, এতদিনে বুঝতে পেরেছি এই রাজনীতি আমার মতো মানুষের জন‍্য নয়।' 


তারও আগে মুখ খুলেছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের হুঙ্কারে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে, মুর্শিদাবাদে তৃণমূলে মহা সঙ্কট তৈরি হয়। ভরতপুরের সালারে নির্দলদের সমর্থনে মিছিল করলেন হুমায়ুন কবীর। ব্লক সভাপতিকে বাদ দিয়ে, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্দল প্রার্থী মহম্মদ আজহারউদ্দিন ওরফে সিজারকে নিয়ে মিছিল করেন তৃণমূল বিধায়ক। 

তারও আগে, মুখ্যমন্ত্রীকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমাদের তৃণমূলের যারা দাঁড়াচ্ছে নির্দল হিসাবে,... আমি ওদের সমর্থনে যাব। ... ঘরে ঘরে যাব আমি। যেটা আমি নিজের জন্য় করতে পারতাম না, সেটা আমি এদের জন্য় করব।' 


এখন প্রশ্ন হল, প্রশ্ন হল প্রার্থী নিয়ে কোন্দলের জেরে জেলায় তৃণমূলের জয়-যাত্রা বিদ্ধ হবে না তো?