কলকাতা : তৃণমূলের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরেই নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে জল্পনা চলছে। এই প্রেক্ষাপটে লোকসভা ভোটের আগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। প্রথমে, লোকসভা ভোটে টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয়ের সুর শোনা গেল তাঁর গলায়। পাশাপাশি দল টিকিট দিলেও তিনি জিততে পারবেন কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। বৃহস্পতিবার বরানগর পুরসভার অনুষ্ঠানে টিকিট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করলেন তৃণমূল সাংসদ।


সৌগতর রাজনৈতিক-জীবন-


ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক থেকে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়ে ১৯৭৭ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম বর্ষীয়ান মুখ সৌগত রায়। পেট্রোলিয়াম ও কেমিক্যাল দফতরের প্রতি মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলান। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের হয়ে রাজনৈতিক জীবনের নতুন লড়াই শুরু হয়। এরপর ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন সৌগত। দীর্ঘ সংসদীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের হয়ে দাবি জানিয়েছেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ। এছাড়াও একাধিক দায়িত্ব ও পদ সামলেছেন তিনি। 


সাম্প্রতিক সময়ে সৌগত রায়ের গলায় শোনা গেছে অন্য সুর। তৃণমূল কংগ্রেসে আদি-নব্য নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘যাঁরা ২০০৯-এর আগে ছিলেন তাঁদের গুরুত্ব দিয়ে দলের সংগঠন করতে হবে। যাঁরা সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদেরই প্রথম সারিতে থাকা উচিত।' এদিকে বর্তমান সময়ে তৃণমূলে সামনের সারিতে উঠে এসেছে অনেক মুখ। এই আবহে টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সৌগত বলেন, "আমার সাংসদ পদে ১৫ বছর পূর্ণ হতে চলল। এরপর কী হবে আমি জানি না। দল কাকে মনোনয়ন দেবে, যদি আমায় দেয় আমি জিততে পারব কি না, এগুলো সবই অনিশ্চয়তা। কিন্তু, আমি সবসময় মনে করি আমরা যা করি তা যেন মানুষ মনে রাখে। "


তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, "এরা যাঁরা ক্ষমতায় থাকেন, তাঁরা তো পদত্যাগ করতে জানেন না। মল আর মূত্র ছাড়া তৃণমূলের লোকেরা কিছুই ত্যাগ করবেন না। উনি গত কয়েক বছর ধরে যে ধরনের মন্তব্য করছেন তাতে ওঁর প্রতি আমার ভক্তি-শ্রদ্ধা কমেছে। উনি কখনো শাহজাহানদের সমর্থন করছেন, কখনো বোমা বানানোর কৌশল বানাচ্ছেন। এত জ্ঞানী মানুষ হওয়ার পরেও যদি টিকিট না দেয় তাহলে তো হতাশা আসবেই।"