সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের কথা মনে আছে তো? ইসলামপুরে সনিয়া গাঁধীর জনসভায় মা দীপা দাসমুন্সির হয়ে ছেলে প্রিয়দীপ ভোট চেয়েছিল। এবারে মেয়ে সৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে ভোট প্রচার করছেন হেমতাবাদ বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী স্ত্রী চন্দ্রিমা রায়। তিনি প্রয়াত প্রয়াত দেবেন্দ্র নাথ রায়ের স্ত্রী। মেয়ের আশা বাবার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবেন মা।  


মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে সাড়ে ৭ মাস সময়। কিন্তু পেছন ফিরে তাকালে এখনও যেন গতকালের সকাল। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বন্ধ দোকানের বারান্দা থেকে উদ্ধার হয় বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ। মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গোটা একটা পরিবার। সেই থেকে জীবনযুদ্ধে একা লড়াই শুরু মা-মেয়ের। কিন্তু স্বামীর সংসার তো এত ছোট ছিল না। সংসার ছাড়াও দল, নিজের বিধানসভা এলাকার মানুষকে নিয়েই ছিল তাঁর বৃহত্তর পরিবার।


বিধায়ক স্বামীর অপূর্ণ কাজ শেষ করতে হবে তো। তাই এবার ভোটের ময়দানে নেমেছেন দেবেনপত্নী চন্দ্রিমা রায়। বাবার মৃত্যুর সময় একমাত্র মেয়ে তখন নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা বহুবার প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু প্রচারে কখনও ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে নেননি তিনি।  ভোটযুদ্ধে মায়ের লড়াই এবার প্রথমবার। তাই মাকে এক মুহূর্ত কাছছাড়া করতে নারাজ মেয়ে। এ গ্রাম থেকে ও গ্রাম। এ পাড়া থেকে ও পাড়া। সবসময় মায়ের সফরসঙ্গী মেয়ে।


হেমতাবাদের বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রিমা রায় বলেন, ‘‘মেয়ে সঙ্গে আছে , প্রার্থী হবার পর সংগঠনের নীচুতলার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছি, সেই কর্মসূচির মাঝেই তিনি এলাকায় ভোট প্রচারও করছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য,পানীয় জলের সমস্যা কথা মানুষের কাছে তুলে ধরছি ৷’’ মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি প্রার্থীর প্রচারকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, ‘‘দেবেনবাবু আত্মহত্যা করেছিলেন, প্রতিটা মৃত্যুই দুঃখজনক, সেই নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে ৷’’


হেমতাবাদে বিজেপির চন্দ্রিমা রায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৃণমূলের সত্যজিৎ বর্মন এবং সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিক সিপিএম প্রার্থী ভূপেন্দ্রনাথ বর্মনের সঙ্গে। স্বামীর গড় ধরে রাখতে পারেন কি না চন্দ্রিমা, তার উত্তর মিলবে ২ মে।