কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। অথচ শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি দীর্ঘদিন ঘরবন্দি। বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে ইচ্ছে থাকলেও চিকিৎসকদের আপত্তি থাকায় যেতে পারেননি। মন খারাপ ছিল। তাঁর নামও উচ্চারিত হয়নি ব্রিগেডের মঞ্চে। যা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল বিস্তর।


বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিবৃতি দিলেন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই। মেধা ও কর্মদক্ষতা বাংলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যার নেপথ্যে রাজ্যের বর্তমান শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বুদ্ধবাবু। বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকেই যে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ভাবনা আমরা রাজ্যের মানুষকে বলার চেষ্টা করছি, তা হল কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বর্তমান সরকারের হাতে গত দশ বছরে সেই কৃষিতে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। উল্লেখযোগ্য কোনও শিল্প আসেনি গত এক দশকে। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সে সময়ের কুটিল চিত্রনাট্যের চক্রান্তকারীরা আজ দুভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়েছে বাংলার যুব সমাজ। সরকারি ক্ষেত্রে কোনও নিয়োগ নেই। বাংলার মেধা ও কর্মদক্ষতা, যা আমাদের সম্পদ, তা আমাদের রাজ্য ছেড়ে ভিনরাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।’


রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গ সবদিক দিয়েই পিছিয়ে পড়েছে। যুবদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে। শিক্ষাঙ্গন কলুষিত। স্বাস্থ্য পরিষেবা গরিব মানুষের নাগালের বাইরে, কার্যত ভেঙে পড়েছে।’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর আবেদন, 'বামফ্রন্ট-কংগ্রেস-আইএসএফ সৈরতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী জনগণের মোর্চা (সংযুক্ত মোর্চা) তৈরি করেছে। রাজ্যের সমস্ত আসনে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের জয়যুক্ত করুন।'


তাৎপর্যপূর্ণভাবে, বুদ্ধবাবুর বিবৃতি এল এমন একটা সময়ে, যখন নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণের ঠিক দুদিন বাকি। আর সামনে সিঙ্গুরেও ভোটগ্রহণ।


রবিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, অধিকারীদের কথাতেই নন্দীগ্রামে পুলিশ ঢুকেছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। বাম নেতারা দাবি করছেন, সত্য অবশেষে উন্মোচিত। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেদিন ভুল করেননি বলে সরব হয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছিল বলেও তোপ দেগেছেন বাম নেতারা।