নয়াদিল্লি: জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। বললেন, ‘দিল্লিতে নির্বাচন সদন নতুন শ্মশান। এখানে সাংবিধানিক সংস্থা পুড়েছে’। পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এভাবেই ট্যুইট করে কমিশনকে নিশানা করলেন তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
নজিরবিহীন আট দফায় নির্বাচন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হল। ফল বেরোল গতকাল। ভোট গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে যায় তৃণমূল। বেলা গড়াতেই স্পষ্ট হয় নবান্নের নীল বাড়িতে তৃতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২১৩ আসনে জিতে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ গণ্ডি ছাড়াতে পারল না বিজেপি। তাদের থামতে হল ৭৭ আসনে।
এবারের ভোটের প্রচারে রাজ্যে বারেবারেই এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপির তাবড় নেতারা। বিজেপির হয়ে প্রচার করেন চলচ্চিত্র তারকা মিঠুন চক্রবর্তীও। অন্যদিকে, হুইল চেয়ারে চেপে রাজ্যজুড়ে প্রচার করেছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রচারে বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনায় সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির কথায় কাজ করছে।
ভোটের প্রচার চলাকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সংখ্যালঘু সম্পর্কে মন্তব্যের কারণে আদর্শ নির্বাচন আচরণবিধিভঙ্গের জন্য কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ওই সময়ও কমিশনের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন মহুয়া। তিনি ট্যুইট করে কমিশনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিশ পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগের পরও কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
কোভিড পর্বে ভোট পরিচালনা নিয়ে সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্ট কমিশনকে তীব্র তিরস্কার করেছিল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কমিশন। এ ব্যাপারেও কমিশনকে ট্যুইটে নিশানা করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। তিনি ট্যুইট করে বলেন, কমিশন হাইকোর্টকে বলেছে যে, এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন এক নিরপেক্ষ সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে কমিশনের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করেছে। এ কথা উল্লেখ করে ট্যুইটে মহুয়ার তীর্যক মন্তব্য, ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য কমিশনের কারুর সাহায্যের দরকার নেই। এ ব্যাপারে তারা অসাধারণ কাজ করেছে।