কলকাতা: রাজ্য বিধানসভার পঞ্চম দফার নির্বাচনে রাজ্যের ৪৫ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শনিবার। ৬ জেলায় মোট ৪৫টি আসনে হবে ভোট গ্রহন হবে।



রাজ্যে চলতি বিধানসভা নির্বাচনে পঞ্চম দফার ভোটেই সবচেয়ে বেশি আসনে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।  এই পর্বে যে আসনগুলিতে ভোট  হচ্ছে, সেগুলিতে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে সামগ্রিকভাবে বিজেপি তৃণমূলের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছিল। বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ৪৫ শতাংশ ভোট।তৃণমূল পেয়েছিল ৪১.৫ শতাংশ ভোট।


 


তবে  বিধানসভাভিত্তিক আসন সংখ্যার নিরিখে এগিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূল ২৩ ও বিজেপি ২২ আসনে এগিয়ে ছিল। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনগুলির মধ্যে ৩২ আসনে জয়ী হয়েছিল, ২০১১-র তুলনায় ছয়টি বেশি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস ১০ আসনে জয়ী হয়েছিল। বিজেপি একটি আসনেও জেতেনি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই আসনগুলিতে এবার সমানে সমানে টক্কর বিজেপির।



২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী এই বিধানসভা আসনগুলিতে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে- দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে।


উত্তর ২৪ পরগনা


 


উত্তর ২৪ পরগনার  পানিহাটি, কামারহাটি, বরানগর, দমদম, রাজারহাট নিউটাউন, বিধাননগর, রাজারহাট গোপালপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, দেগঙ্গা, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি , বসিরহাট দক্ষিণ, বসিরহাট উত্তর, হিঙ্গলগঞ্জ আসনে শনিবার পঞ্চম দফায় ভোটগ্রহণ।



বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের ২০১৯-এর ভোটের ফল অনুসারে-


 


মিনাখাঁ বিধানসভা আসনে এগিয়েছিল তৃণমূল। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১,১৮,৪৩৩। বিজেপি পেয়েছিল ৫১,৮৮৬ ভোট। বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ১০,৩৮৭ । 


 


হাড়োয়া আসনে ১,৩৪,৫৪৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি পায় ৩৬,৯৯৫ ভোট। বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১১,৯৪৯।


 


সন্দেশখালি বিধানসভা আসনেও এগিয়েছিল তৃণমূল। তারা পেয়েছিল ১,০৩,৬০০ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৭৬৬৮৮ ভোট। বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫৫৪৫। 



বসিরহাট উত্তর আসনেও ১,২৭,৭৩৬ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৪৪,৯৮০ ভোট।বামেদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১২,১১৯।  



বসিরহাট দক্ষিণে ১,০৫,৪০৬ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পায় ৯০,৫০৬ ভোট, বামেরা পেয়েছিল ৮,৩৬৬ ভোট। 



হিঙ্গলগঞ্জে ৯৫,৯৮৬ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৭৩,৭৫৯। বাম প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬,০৮১ ভোট।



২০১৯-এ বারাসত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী-



রাজারহাট নিউটাউন বিধানসভা আসনে ১,০৩,৩৪৩ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। ৭৯,৭০০ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। বাম প্রার্থী পেয়েছিলেন ১৪,৯৮২ ভোট। 



বিধাননগর আসনে ৫৮,৯৫৬ ভোট পেয়ে পিছিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৭৭,৮৭২ ভোট। বামপ্রার্থী পেয়েছিলেন ১৪,৩১৪ ভোট।  



দেগঙ্গায় ১,১৪,৭১৫ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৪০,৮০৯ ভোট। বাম প্রার্থী ১৯,২৯৮ ভোট পেয়েছিলেন। 



বারাসত আসনে ৯৩,০২৩ ভোট পেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি ৮৯,৪৩৩ ভোট পেয়েছিল। বাম প্রার্থী পেয়েছিলেন ২১,০৩৩ ভোট।


দমদম লোকসভা কেন্দ্রের ২০১৯-এর ফল অনুযায়ী-



পানিহাটি আসনে ৭৩,৮০২ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৬৪,০৭১ ভোট। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ২১,৭৭০। 



কামারহাটি আসনে ৬৩,৩৫৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৪৫,৬৩১ ভোট। সিপিএম পায় ২১,৪৩৩ ভোট।  



বরানগরে ৭০,১৭৬ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৫৫,৪৮১ ভোট। সিপিএম পায় ২৩,৫৬১ ভোট।  



দমদম আসনে ৭৬,৫২৬ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পায় ৭১,৪১৪ ভোট। সিপিএম পেয়েছিল ২২,৬০০ ভোট।



রাজারহাট-গোপালপুরে ৭০,৮২৮ ভোট পেয়ে তৃণমূলকে পিছনে ফেলেছিল বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছিল ৭০,০৮৫ ভোট। সিপিএম পেয়েছিল ২২,২১২ ভোট। 


দার্জিলিং


দার্জিলিংয়ের যে বিধানসভা আসনগুলিতে ভোট হবে, সেগুলি হল-



দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি , শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া।



দার্জিলিং লোকসভা আসনে ২০১৯-এর ফল অনুযায়ী-


 


দার্জিলিং আসনে ১,১৯,৪২৮ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৩৩,৬০৪, কংগ্রেস ২,৭৬১, সিপিএম ১০৩৩ ভোট পেয়েছিল।



কার্সিয়াং আসনে বিজেপি  ১,২২,৩৯৩ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল। তৃণমূল ৩৪,৭৯৬, কংগ্রেস ২,৯৬৭, সিপিএম ১,২১৪ ভোট পেয়েছিল।


 
মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি আসনে ১,৪৪,১৭৫ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল ৪৫,২৭৭, কংগ্রেস ১০,৭৩৩ ও সিপিএম ১৪,৫৪০ ভোট পেয়েছিল। 



শিলিগুড়িতে ১,০৫,১৪৮ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল ৩৯,৬৬২, কংগ্রেস ৬,৬২৬ ও সিপিএম ১৩,৯০১ ভোট পেয়েছিল। 



ফাঁসিদেওয়াতে ১,০৭,১১৫ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৫৩,৮৫৪, কংগ্রেস ১৫,৫২৬ ও সিপিএম ৭,৯৩৩ ভোট পেয়েছিল। 


 


কালিম্পং


কালিম্পং জেলার কালিম্পং বিধানসভা আসনে পঞ্চম দফায় ভোটগ্রহণ।



দার্জিলিং লোকসভার অন্তর্গত  কালিম্পং বিধানসভা আসনে ৯৬,৮৭৭ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৩৪,৩০২, কংগ্রেস ৩,৩৬২ ও সিপিএম ৪২২ ভোট পেয়েছিল।


 


জলপাইগুড়ি


জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি , জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জ, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, মাল, নাগরাকাটা আসনে পঞ্চম দফায় ভোট।



জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে ২০১৯-র ভোটের ফল অনুযায়ী-


 


ধূপগুড়ি আসনে ১,০৫,৭২৯ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৮৭,৯৬৩, সিপিএম  ১৩,০১৬ ও কংগ্রেস ৩০৬৫ ভোট পেয়েছিল।



ময়নাগুড়িতে ১,১০,৮১৯ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল পায় ৯৬,০৭২ ভোট পেয়েছিল। কংগ্রেস ১,৭০৫ ও সিপিএম ৫,৯১৬ ভোট পেয়েছিল। 



জলপাইগুড়ি আসনে ১,১২,১৪৭ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৭২,৯৬২, সিপিএম ১৬,৪১২ ও কংগ্রেস ৮,৩১১ ভোট পেয়েছিল।



রাজগঞ্জ আসনে ৯৪,৭২৪ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পায় ৯০,৪০৭ ভোট। কংগ্রেস ৩,১২৪ ও সিপিএম ৯৯২৬ ভোট পেয়েছিল।



ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসনে ১,৫০,৫৬৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূলের ভোট ৬৪,৪৪৯। সিপিএম ১৩,৪০৮ ও কংগ্রেস ৪,৩০০ ভোট পায়। 



মাল আসনে ১,০০,৯৯৮ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছিল ৭৬,৯৩৯ ভোট। সিপিএম ৯,২২৩ ও কংগ্রেস ৪,৫৪৭ ভোট পেয়েছিল।


 


নদিয়া



নদিয়ার শান্তিপুর, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম, কৃষ্ণগঞ্জ , রানাঘাট উত্তর-পূর্ব , রানাঘাট দক্ষিণ , চাকদহ, কল্যাণী , হরিণঘাটা বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহন ।



রানাঘাট লোকসভা আসনে ২০১৯-র ভোটের ফল অনুযায়ী-



শান্তিপুর আসনে ১,১২,৫৯৯ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল পায় ৭৭,৫৮৭ ভোট। সিপিএম ১১,৬২৮ ও কংগ্রেস ৩,৪৭২ ভোট পেয়েছিল।



রানাঘাট উত্তর পশ্চিমে ১,১৯,০০০ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি।তৃণমূল পায় ৭৪,৫৬৮ ভোট। সিপিএম ১৪,১২১ ও কংগ্রেস ৩,২৪৫ ভোট পায়।



কৃষ্ণগঞ্জ আসনে ১,২১,২৩৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল ৮৩,৭২৯, সিপিএম ১০,১৩১ ও কংগ্রেস ২০৫২ ভোট পায়।



রানাঘাট উত্তর-পূর্বে ১,১৬,৮৩৭ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল ৭৩,৬১১, সিপিএম ৬,৬৩৩ ও কংগ্রেস ২,০৫২ ভোট পেয়েছিল। 



রানাঘাট দক্ষিণে ১,২৪,৬০৭ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছিল ৭৯,৬৭৬ ভোট। সিপিএম পায় ১৩,৯১৩ ও কংগ্রেস ৪,৯১৯ ভোট পেয়েছিল। 



চাকদহ আসনে ১,০১,১৩১ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল পায় ৭১,১৪৪ ভোট। সিপিএম ১৮,৬৬৮ ও কংগ্রেস ৪০৩৭ ভোট পেয়েছিল।



কল্যাণী আসনে ৯৩,২৯২ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল পেয়েছিল ৮৬,২৩৬ ভোট। সিপিএম  ১৬,৮৯৩, কংগ্রেস ২,৮৪৮ ভোট পায়।



হরিণঘাটা আসনে ৯৪,৩৬৬ ভোট পেয়ে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল পায় ৮৪,৮৯৯ ভোট। কংগ্রেস ২,৮৩৭, সিপিএম ১৩,৪৫৪ ভোট পেয়েছিল।


পূর্ব বর্ধমান



পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ , বর্ধমান দক্ষিণ, রায়না , জামালপুর , মন্তেশ্বর, কালনা , মেমারি, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা আসনে ভোট হবে।



বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনে ২০১৯-এর ভোটের ফল অনুসারে –



খণ্ডঘোষ আসনে ১,০২,৪৯৪ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি ৭১,৫০০ ভোট পায়।সিপিএম ১৯,৪৫১ ও কংগ্রেস ৩,৮০৯  ভোট পায়।



পূর্ব বর্ধমান লোকসভা আসনে ২০১৯-এর ভোটের ফল অনুসারে-



রায়নায় ১,১৩,১৮০ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি পায় ৫৮,৩৩১ ভোট। বাম প্রার্থী পান ৩৩,৫১০ ভোট।



জামালপুরে ৮১,৯৪১ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি ৭৮,২৫৭ ভোট পেয়েছিল। বামেদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৬,০০৭।



কালনায় ৮৬,৩৫৭ ভোট পেয়ে এগিয়েছিল তৃণমূল। বিজেপি পায় ৮২,৭২৪ ভোট। সিপিএম পেয়েছিল ১৯,৬৬১ ভোট।



মেমারি-তে ৮৬,৩৫৭ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল।বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৮১,৩৮৩। সিপিএম পায় ২৮,৭৮০ ভোট।



বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে ২০১৯-এর ভোটের ফল অনুসারে বর্ধমান দক্ষিণে ৮৫,৩০১ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি পায় ৮৩,৯৬৩ ভোট। সিপিএম ১৮,৮৪৮ ভোট পেয়েছিল। 



বর্ধমান উত্তরে ১,০৮,৬৬৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি পায় ৮০,৬১৭ ভোট। সিপিএম ২৫,৩৭৩ ভোট পেয়েছিল।



মন্তেশ্বরে ৯৫,২০২ ভোট পেয়ে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৬৭,১৬৬। সিপিএম ২৩,৪৩৫ ভোট পায়।