কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আলিপুর আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। পশু কল্যাণ সংক্রান্ত কাজে দিল্লিতে বিজেপি অফিসে গেলেও, তিনি তৃণমূলেই আছেন বলেও দাবি করেছেন দেবশ্রী।


শোভনের বিরুদ্ধে দেবশ্রীর অভিযোগ, ‘যাঁরা স্ত্রী-সন্তানকে নিজের করতে পারেন না, তাঁরা কী করে জনপ্রিয় নেতা হবেন, তাঁরা কী করে ভোট পাবেন? শোভন-বৈশাখী সোশ্যাল এমব্যারাসমেন্ট।’

এই অভিনেত্রীকে পাল্টা আক্রমণ করে বৈশাখী বলেছেন, ‘উনি পলিটিক্যাল এমব্যারাসমেন্ট। মানহানির মামলা করেছেন শুনে খুশি হলাম। উনি আমার বাক স্বাধীনতা খর্ব করতে পারেন না। অভিনেত্রী হিসেবে উনি কী করেছেন, সেটা ফিল্ম স্টাডিজের ছাত্রী হিসেবে আমি দেখেছি। বর্তমানে ওঁকে দেখা যাচ্ছে না। সেটা উনি অস্বীকার করতে পারেন না। সুচিত্রা সেনকেও তো একটা সময়ের পর দেখা যায়নি। সেটা বললে কি মানহানির মামলা করতে হবে! বিজেপি অফিসে গিয়েছিলেন। বহুক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন আমাদের নেতা দেখা করেননি, তখন বাড়ি ফিরে এসেছেন। বিজেপি অফিসে আর কিছু করতে কেউ যায় বলে আমার জানা নেই। তৃণমূল যতক্ষণ রাখবে, ততক্ষণ তিনি তৃণমূলেই আছেন।’

শোভন বলেছেন, ‘ওঁর সম্পর্কে বলতে আমার লজ্জা করে। ২০১৬ সালে আমাকে হাত জোড় করে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভোট চাইতে হয়েছিল। ভারতীয় জনতা পার্টির অফিসে কোন নাটক করতে গিয়েছিলেন? এনজিও-র নাম করে টোটো আর মোটো করুন। উনি নিজেকেই খাটো করেছেন।’

দেবশ্রীকে শোভন আরও বলেছেন, ‘উনি সন্তানের মা নন আর ওঁর যে সংসার ছিল, তার কী পরিণতি হয়েছে, সেটা যেন মানুষের কাছে খোলসা করেন। আমি তো নির্দিষ্ট অভিযোগ এনে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছি। সেই মামলা চলছে। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি! কথায় বলে, সে ডাইনি।’

বৈশাখী বলেছেন, ‘এটুকুই বলতে পারি, কৃতজ্ঞতার যদি লেশমাত্র থাকত, তাহলে যাঁর হাত ধরে ওঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার গড়ে উঠেছিল, তাঁর সম্পর্কে এরকম কুরুচিকর ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে উনি নিজেকে আটকে রাখতেন। উনি যে কতটা অকৃতজ্ঞ, সেটা আজ প্রমাণ করে দিলেন। বাকি ফয়সলা আদালতে হবে।’

স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বাবা দুলাল দাসকে আক্রমণ করে শোভন বলেছেন, ‘দুলাল দাস দ্বিচারিতা করছেন, অসত্য কথা বলছেন। অনেক গোডাউনের জমির মালিকানা আমার। উনি ক্লেম সেটলমেন্টের টাকা আমাকে দেননি। উনি বলেন মেয়ের ভরণপোষণ করবেন। ওঁর মেয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য সংসার করতে পারিনি, ছেড়ে চলে এসেছি। উনি বলেছেন মেয়েকে বসিয়ে খাওয়াব। কেন আমার অর্থগুলো আটকে রেখেছেন? রত্নাদেবী দিনে একশোটা ফোন কাকে করতেন দুলাল দাস খোঁজ নিন।’