কলকাতা: বিজেপির প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষ। সূত্রের খবর, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে জানালেন শোভন ও বৈশাখী।


রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রবীর ঘোষাল, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, দীপক হালদার, একাধিক তৃণমূল ত্যাগী বিধায়কদের তাঁদের পুরনো কেন্দ্রেই প্রার্থী করেছে বিজেপি। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বেহালা পূর্ব থেকে তৃণমূল ত্যাগী প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়রকে প্রার্থী করল না গেরুয়া শিবির। এই দফার প্রার্থী তালিকায় নাম নেই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।


আর সূত্রের খবর, এর পরেই কলকাতা জোনের বিজেপির পর্যবেক্ষক পদ থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং কলকাতা জোনের বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক পদ থেকে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। শুধু পদ নয়, দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েও ইতিমধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন শোভন-বৈশাখী।


কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? শোভন-বৈশাখীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি, বেহালা পূর্ব আসন থেকে ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু দল চেয়েছিল তাঁকে বেহালা পশ্চিম আসনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করতে। আর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করতে রাজি হয়নি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব!


রবিবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতে দেখা যায়, বেহালা পূর্বে অভিনেত্রী পায়েল সরকারকে প্রার্থী করা হয়েছে। এরপরেই উচ্চ নেতৃত্বের কাছে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন শোভন-বৈশাখী।


ফেসবুকে তাঁর ও শোভনের একটি ছবি পোস্ট করে বৈশাখী লেখেন, তুমি চিরকালই আমার আইকন থাকবে। আজকের অপমান আমাদেরকে কোনওভাবে দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা লড়াই করে ফিরব এবং জিতব।


 


তবে তৃণমূল ও সিপিএমত্যাগী একাধিক নেতা নেত্রী টিকিট পেলেও, তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় প্রার্থী তালিকায় নাম নেই কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিচেন ক্যাবিনেটের প্রাক্তন সদস্য শোভন চট্টোপাধ্যায়ের! তিনি আগেই এই আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। শোভনের বদলে বেহালা পূর্ব আসনে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া  অভিনেত্রী পায়েল সরকারকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অথচ এই শোভনকে সামনে রেখেই কলকাতা দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বেহালাতেও প্রচারে গিয়েছিলেন শোভন। বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁদের। শোভন ও বৈশাখীর দিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শোভেনের স্ত্রী রত্নাকে বেহালা পূর্বে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছিল পাল্টা কি রত্নার মুখোমুখি শোভনকে তাঁর পুরনো কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করবে বিজেপি? নাকি রত্নার সঙ্গে বৈশাখীর লড়াই দেখা যোতে পারে? কিন্তু সে সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিল বিজেপি। এখন পরবর্তী দফাগুলিতে অন্য কোনও আসন থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয় কি না, সেটাই দেখার।