রাজীব চৌধুরী, জঙ্গীপুর: মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখেই আক্রান্ত শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী। বোমাবাজিতে গুরুতর আহত জাকির হোসেন। ভর্তি জঙ্গীপুর হাসপাতালে। কারা করল এই কাজ, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক, দাবি তৃণমূলের।


রাজ্যে এবার আক্রান্ত খোদ মন্ত্রী! প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখে মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি! গুরুতর জখম মন্ত্রী জাকির হোসেন সহ কয়েকজন! বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে।


তৃণমূল সূত্রে খবর, কলকাতা ফেরার জন্য ট্রেন ধরতে প্ল্যাটফর্মের দিকে যাচ্ছিলেন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তখনই মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। গুরুতর জখম হন মন্ত্রী ও তাঁর কয়েকজন সঙ্গী।


এই ঘটনার পরই আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গীপুর হাসপাতালে। শুরু হয় অস্ত্রোপচার। 


এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি আবু তাহের বলেছেন, ‘কারা এই ঘটনা ঘটাল বুঝতে পারছি না। পুলিশ সুপারকে দেখতে বলেছি। আমরা দলের পক্ষ থেকেও তদন্ত করছি। বড় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। কে তার শত্রু? পুলিশ দেখছে।’


কিন্তু কেন আক্রান্ত হলেন একজন মন্ত্রী? হামলার নেপথ্যে কারা? তৃণমূল সূত্রে দাবি, জেলায় গরু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মন্ত্রী। এ নিয়ে এলাকার কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে তঁর বিবাদও ছিল। যার ফলে দীর্ঘদিন ধরেই টার্গেট ছিলেন জাকির হোসেন। পাশাপাশি, দলের একাংশের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ছিল বলেও দাবি অনুগামীদের। আক্রান্ত হতে পারেন বলে রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগও দায়ের করেন জাকির হোসেন।


রাতেই জঙ্গীপুর হাসপাতাল থেকে কলকাতায় আনা হচ্ছে আহত জাকির হোসেনকে।


একই ইঙ্গিত করেছে কংগ্রেসও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, ‘তৃণমূলের যে ঘরানা, তার সঙ্গে জাকির হোসেন চলতে পারেনি। তাই যারা লুঠ করে, চুরি করে, গরু পাচার করে, তাদের সঙ্গে জাকিরের দ্বন্দ্ব ছিল। জাকির চাইত না, চাষের জমি নষ্ট করে বাংলাদেশে হাজার হাজার গরু পাচার হোক। পুলিশও জাকির হোসেনকে সাহায্য করত না। সে সততার ভাবমূর্তি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করত। এটাই তার অপরাধ। রাজ্যে একজন মন্ত্রীও নিরাপদ নন।’


বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। রাজ্যের একজন মন্ত্রীও নিরাপদ নন। বিরোধী দলের উপরে হামলা তো হচ্ছেই, এবার সরকারি দলের মন্ত্রীর উপরেও হামলা হচ্ছে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এরকম হলে সাধারণ মানুষের কী হবে?’