গোপাল চট্টোপাধ্যায়: বীরভূমের দুবরাজপুরে বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করল বিজেপিরই স্থানীয় বুথ সভাপতি দুলাল ডোমকে।
গতকালই বিজেপির বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃতের স্ত্রী। গতকাল রাতে পুলিশ আটক করে দুলাল ডোমকে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বিজেপি কর্মী পতিহার ডোমকে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী, তা ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পতিহার ওই এলাকায় দীর্ঘদিন বিজেপি করতেন। দুলাল কিছুদিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
গতকাল পতিহার ডোমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রর চেহারা নেয় বীরভূমের দুবরাজপুর। বিজেপি অভিযোগ করে, খুনের পেছনে রয়েছে তৃণমূলই। যদিও, মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী, অভিযোগের আঙুল তুলেছে, বিজেপিরই বুথ সভাপতির দিকে!
মৃতদেহ উদ্ধারে গেলে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি। আহত হন দুবরাজপুর থানার ওসি। মাথা ফাটে এএসআই-এর। পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে।
বিজেপির দাবি, পুলিশের গুলিতে আহত তাঁদের এক কর্মী। মঙ্গলবার সকালে, দুবরাজপুরের ফকির বেরা গ্রামে, বাড়ির অদূরে বিজেপি কর্মী পতিহার ডোমের (৩৬) মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
বিজেপির তরফে দাবি, সোমবার রাতে, দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন পতিহার। রাতে বাড়ি ফিরে আসেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির অদূরে মাঠে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলই খুন করেছে।
নিহত বিজেপি কর্মীর দাদার দাবি, তৃণমূলের লোকেরাই মেরেছে। বৌদিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এদিকে, মৃতের স্ত্রীর দাবি, সোমবার রাতে, স্থানীয় বিজেপির বুথ সভাপতি দুলাল ডোমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়, তাঁর স্বামী পতিহার ডোমের। খুনের নেপথ্যে দুলালের হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃতের স্ত্রী।
গতকাল রাতে দুলাল ডোম সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। খুনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দুবরাজপুর তৃণমূল কংগ্রেস ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্র বলেন, প্রকৃত তদন্ত হোক। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করুক।
ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইলামবাজার-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে প্রতীকী অবরোধ করা হয়। এরইমধ্যে, বেলা ১২টা নাগাদ গ্রামে আসে দুবরাজপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে গেলে, পুলিশের গাড়ি আটকায় বিজেপি কর্মীরা।
বিজেপির দাবি, আটক বিজেপি নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বিজেপি কর্মীদের।
মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। পুলিশ জোর করে মৃতদেহ তুলতে গেলে খণ্ডযুদ্ধ বাধে।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। ইটের আঘাতে দুবরাজপুর থানার ওসি দেবব্রত সিংহের পায়ে আঘাত লাগে। মাথা ফাটে, অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের।
ভাঙচুর চালানো হয় অ্যাম্বুল্যান্সে। পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাঁদের দাবি, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এক বিজেপি কর্মীকে।
যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে দুবরাজপুর থানার পুলিশ।