ঝিলম করঞ্জাই:  চোট লাগা বাঁ পা নাড়াচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও পোস্ট করে তৃণমূল-কে নিশানা করলেন বিজেপি নেতা প্রণয় রায়। বিষয়টিকে নোংরা রাজনীতি বলে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল। শুরু হয়েছে সংঘাত। যদিও মমতার পা নাড়ানোয় অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না চিকিৎসকমহলের একাংশ। 


নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায়, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে চোট লাগার ঘটনায় রাজনীতি অব্যাহত। কীভাবে চোট?  ষড়যন্ত্র না দুর্ঘটনা? এসব নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি তরজা চলছিলই। সংঘাতের আঁচ আরও গনগনে করে তুলল সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও। বিজেপি নেতা প্রণয় রায় এই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। 


ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, ঘরের মধ্যে হুইল চেয়ারে বসে আছেন তৃণমূল নেত্রী। চোট লাগা বাঁ পা নাড়াচ্ছেন। কখনও চোট লাগা বাঁ পায়ের ওপর ডান পা তুলে রাখতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। 


বিজেপি নেতা প্রণয় রায় কটাক্ষ করে লিখেছেন, আগেই বলেছিলাম নন্দীগ্রামে ভোট হয়ে গেলেই পা ঠিক হয়ে যাবে!


আরও পড়ুন:


WB Election 2021 Voting: আহত পা দোলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী! 'বিজেপির দেউলিয়া রাজনীতি', তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের


ভাইরাল এই ভিডিও কখন, কোথায় তোলা, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে গোটা বিষয়টিকে কদর্য রাজনীতি বলে আখ্যা দিয়েছে তৃণমূল।


গত ১০ মার্চ, নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় জনসংযোগের সময় বাঁ পায়ে চোট পান তৃণমূল নেত্রী। গ্রিন করিডর তৈরি করে তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়, এসএসকেএমে।


১২ মার্চ তিনি এসএসকেএম থেকে ছাড়া পান। এরপর বাঁ পায়ে ব্যান্ডেজ আর হুইল চেয়ারে বসেই নন্দীগ্রাম-সহ জেলায় জেলায় প্রচার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


তাঁর পায়ে চোট নিয়ে শুরু থেকেই বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভোটের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস। আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। তোমার নির্দেশ ছাড়া এসব হতে পারে না।


পাল্টা বিজেপির দাবি ছিল, সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মাননীয়া বলছে আগে সিপিএম মারত, এখন বিজেপি মারছে মিথ্যা কথা বলছে। 


সংঘাতের আবহেই চোট লাগা পা নাড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হতেই ফের রে রে করে উঠেছেন বিজেপি নেতারা। গুরুতর চোট লাগলে, এভাবে পা নাড়ানো যায় কি? প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। যদিও, চিকিৎসক মহলের একাংশ, পা নাড়ানোয় অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না!


অর্থোপেডিক সার্জন গৌতম সাহা বলেন, ওনার লিগামেন্টের ইনজুরি বেশি লাগে, পুরোপুরি সারতে ৬ সপ্তাহ লাগে, প্রথম ৩ সপ্তাহ-৬ সপ্তাহ রিহ্যাবিলিটেশন করতে হয়, চিকিৎসকের পরামর্শে করতে হয়, তখন পায়ের যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত, তা বাদ দিয়ে অন্য অংশ নাড়াচাড়া করতে হয়, এটাই কাম্য, গাইডলাইন তাই বলছে, যাঁরা ওনার মেডিক্যাল বোর্ডে আছেন, তাঁরা আমার সঙ্গে দ্বিমত হবেন না।


নন্দীগ্রামে প্রচারের শেষ দিনে এক পায়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতে অংশ নেওয়ার পরেও তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতারা।  এবার তাদের অস্ত্র ভাইরাল এই ভিডিও। 


যা দেখে অনেকেই বলছেন, বঙ্গ রাজনীতি এবার অনেক কিছুই ঘটছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।