সৌভক মজুমদার, বিটন চক্রবর্তী ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: ভোটের মুখে তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে গিয়ে হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার!আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে খুনের মামলা তুলে নেওয়ার তমলুক আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।রাজ্য মামলা প্রত্যাহার করতেই পারে তবে, তার নির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে।ইচ্ছেমতো এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না বলে পর্যবেক্ষণে জানিয়ে দিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
২০১৯-এর অক্টোবরে দলীয় অফিসের মধ্যেই খুন হন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লকের কার্যকরী সভাপতি কুরবান আলি শাহ। সম্প্রতি, সেই ঘটনায় ধৃত জেলবন্দি আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। সেই মতো মঙ্গলবার তমলুক আদালত আনিসুরের বিরুদ্ধে থাকা মামলা তুলে নেওয়া হয়।
এদিকে, আনিসুরের জেল-মুক্তির বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নিহত তৃণমূল নেতা কুরবানের পরিবার। সেই মামলায় এদিন, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, আগে জামিনের বিরোধিতা করলেও, হঠাৎ কেন মামলা প্রত্যাহার করা হল?রাজ্য সরকার কেন এই ধরনের নির্দেশিকা দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়।এই ধরনের পরিস্থিতিতে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। অনিসুরকে ইতিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকলে, ফের গ্রেফতার করতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ আসার আগেই, মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বন্দী আনিসুর রহমানকে।
রীতিমতো পুষ্পবৃষ্টি করে তাঁকে স্বাগত জানান অনুগামীরা!কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ আসার পরই কোলাঘাট থেকে ফের তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে আনিসুর রহমানের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তাৎপের্যপূর্ণ বিষয় হল, আনিসুর রহমান যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন জেলার রাজনীতিতে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ঘোর বিরোধী বলে পরিচিত ছিলেন! এরপর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তারপরই তাঁকে তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনে গ্রেফতার করে পুলিশ!এরপর সম্প্রতি আনিসুরের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেন। আর তারপরই আনিসুরের পুরনো দল তৃণমূলে ফেলার জল্পনা জোরালো হয়!
তড়িঘড়ি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারও করে নেয় রাজ্য সরকার।কিন্তু, শেষ অবধি ছাড়া পেয়েও ফের জেলবন্দী হলেন আনিসুর রহমান।
সব মিলিয়ে অনিসুরের জেল-মুক্তি নিয়ে ভোটের মুখে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।