সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবার শান্তিপুরে এসে দলেরই উপেক্ষার মুখে অরিন্দম ভট্টাচার্য।
পাওয়ার কথা ছিল উষ্ণ অভ্যর্থনা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যর পাশে দেখাই গেল না কোনও বিজেপি নেতাকে।


দলবদলের পর শান্তিপুরে শীতল অভ্যর্থনার সাক্ষী হলেন বিধায়ক, এলেন না বিজেপির কোনও নেতা, কর্মী।
আর এ নিয়েই ফের একবার উস্কে গিয়েছে বিজেপির আদি-বনাম নব্যের দ্বন্দ্ব।
শনিবার শান্তিপুরের একটি ক্লাবে অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনে যান অরিন্দম ভট্টাচার্য। কিন্তু সেখানে বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি!
মাত্র ৯ দিন আগে কংগ্রেস, তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যোগ দেন অরিন্দম ভট্টাচার্য।
কিন্তু তাঁর বিজেপিতে যোগদানের আগেই দলের অন্দরে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শান্তিপুরে বিক্ষোভও দেখান বিজেপি কর্মীরা।
সেই ক্ষোভ কী এখনও কাটেনি? প্রশ্ন উঠছে।

শান্তিপুর শহর বিজেপির সভাপতি বিপ্লব কর বলেছেন, আমাদের কিছু জানানো হয়নি, আমরা ব্যস্ত আছি দলীয় কাজে।
আর এই প্রেক্ষাপটেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, যাঁরা দল বদল করেন, তাঁরা নীতির জন্য রাজনীতি করে না। তাই অন্য দলে গিয়ে সম্মানও পান না।
শান্তিপুরের বিধায়ককে দলে নেওয়া নিয়ে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।

রাজ্য বিজেপি সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমাদের অফিসে এসেছিলেন। সবার সঙ্গে দেখা করেছেন। একটা দ্বন্দ্ব তো হয়। তবে মিটে যাবে।

যদিও তাঁকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে যে আদি-নব্য বিবাদ দানা বেঁধেছে তা মানতে নারাজ সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী বিধায়ক।

তাহলে কেন তাঁর পাশে এদিন দেখা গেল না স্থানীয় কোনও বিজেপি নেতা-কর্মীকে? এ নিয়ে অবশ্য সাফাইয়ের সুর শান্তিপুরের বিধায়কের গলায়। তিনি বলেছেন, অমিত শাহ জেলায় আসার কথা থাকায় বিজেপির একটা অংশ তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

বিজেপিতে যোগ দিয়ে অবশ্য ওয়াই ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পেয়েছেন অরিন্দম ভট্টাচার্য।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস জোট প্রার্থী হিসেবে শান্তিপুর থেকে ১৯ হাজার ৪৮৮ ভোটে জেতেন অরিন্দম ভট্টাচার্য।২০১৭-র জুনে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
২০১৯-র লোকসভা ভোটের নিরিখে শান্তিপুরে ৩৫ হাজার ১২ ভোটের লিড পায় বিজেপি
কিন্তু তৃণমূল থেকে আসা বিধায়ককে নিয়ে দলের মধ্যে যেভাবে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তাতে আসন্ন বিধানসভা ভোটে শান্তিপুরে এই ফল কি ধরে রাখতে পারবে বিজেপি?
উত্তর লুকিয়ে আছে সময়ের গর্ভে।