সমীরণ পাল, প্রকাশ সিনহা ও ঝিলম করঞ্জাই, এবিপি আনন্দ: ‘আমি শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও দলের একটা অংশ মিথ্যে মামলায় ফাঁসাচ্ছে’,   এই এই অভিযোগ করার ঠিক দু’দিন পরেই তৃণমূল ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের শিক্ষা, তথ্য-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন। 


গত বছর ১৯ ডিসেম্বর, শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দিন তিনিও পদ্ম শিবিরে নাম লেখান।একসময় বসিরহাটের তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অবশ্য নিজের এলাকায় বেশি থাকছিলেন না।


সেই বাবু মাস্টারের ওপরই শনিবার রাতে মিনাখাঁর লাউগাছি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে হামলা হয়। 


অভিযোগ, বাসন্তী হাইওয়ের ওপর বাবু মাস্টারের গাড়ি ঘিরে ধরে ১০-১২ জন দুষ্কৃতী এলোপাথাড়ি গুলি-বোমা ছোড়ে।  গুরুতর আহত অবস্থায় বিজেপি নেতা ভর্তি অ্যাপোলো হাসপাতালে।


এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর। হামলার ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি।  অ্যাপোলোয় বিজেপি নেতাকে দেখতে যান শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ট্যুইটে অভিযোগ করেন, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা নির্দয়ভাবে হামলা চালিয়েছে।  ...এর থেকে প্রমাণ হয় তৃণমূল কতটা মরিয়া।


বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, গোটা ঘটনা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হবে।


রাজ্য বিজেপি সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,ভয় পেয়ে তৃণমূল এসব করছে।  দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব এবং অমিত শাহকে গোটা বিষয়টি জানাব।


এই ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে সিপিএম। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, এই ঘটনায় আমাদের কোনও হাত নেই। তৃণমূল জেলায় এই ধরনের রাজনীতি করে না। তবে এটা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে হতে পারে। 


গত বছরের ৪ অক্টোবর  টিটাগড়ে খুন হন বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা।সেবার টিটাগড় থানার অদূরেই খুন হন মণীশ।  তিনিও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।  এবার একই জেলারই মিনাখাঁয় হামলা হল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বাবু মাস্টারের ওপর।  যা নিয়ে ফের সরগরম জেলার রাজনীতি।