দীপক ঘোষ ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হল বিজেপি। এতদিন দুর্নীতি ইস্যুতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করত তারা। এবার এগরার সভায় অমিত শাহের চাঞ্চল্যকর দাবি, ভাইপোর কাটমানি যায় মমতার হাতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিজেপিই সবচেয়ে বড় তোলাবাজ।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান মমতাদি। মোদিজি সোনার বাংলা গড়তে চান। ভাইপোর কাটমানির টাকা যাচ্ছে দিদির কাছে ৷’’ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘দিল্লি সরকার রাবনের সরকার-দুর্জোধনের সরকার-দানবের সরকার-দৈত্যের সরকার। গদ্দারের সরকার-মীরজাফরের সরকার ৷’’


মাঝে কয়েকদিনের ব্রেক। ফের ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের মুখে মুখে সেই ভাইপো। প্রথম দফার ভোটের আগে শেষ রবিবাসরীয় প্রচারে ফের পুরনো কৌশলে শান দিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। আর এরইসঙ্গে প্রথমবার কাটমানির টাকা ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছয় বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শানালেন অমিত শাহ। আর এক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রীর পুরনো মন্তব্যকে হাতিয়ার করে খোঁচা দিলেন তিনি। এর আগে গত ৭ মার্চ শিলিগুড়ির সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘একটা গরিব লোক তোলাবাজি করলে ৫টাকা, ১০টাকা, ৫০০ টাকা হয়, আর আপনার বন্ধু তো আম্বানি আদানি ৷’’


এগরার সভায় এদিন অমিত শাহ বলেন, ‘‘সব কাজে কাটমানি দিতে হচ্ছে। তোলাবাজি হচ্ছে। আর মমতাদিদি বলেন যে ৫০০ টাকা নিয়েছে, তাতে কী হয়েছে। আরে মমতাদিদি আপনার বিষয়টা আলাদা। ভাইপোর কাটমানি আপনার কাছে আসে। বাংলার গরিব শ্রমিক, মৎস্যজীবীদের কাছে ৫০০ টাকা অনেক বড়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের পাঁচ আনাও কাটমানি দিতে হবে না।’’ বাঁকুড়ার সভায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘‘সিন্ডিকেটে আপত্তি নেই দিদির, কারণ যত সিন্ডিকেট ফুলবে, ততই কাটমানির টাকা বাড়বে ৷’’


বিজেপির তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।অমিত শাহের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির গলাতেও সেই ভাইপো আক্রমণ!পাল্টা কৌশলে মোদির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, তাঁকে কোন সরকার কত উন্নয়ন করেছে তা নিয়ে বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ময়নার সভায় তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমায় এসে গালিগালাজ করছেন। উনি আমার চেয়ে বয়সে বড়। ওনার গালাগালি আমার কাছে আশীর্বাদ। কিন্তু, উনি বাংলার জন্য কী করবেন, সেটা কেন বলছেন না ৷’’


সব মিলিয়ে ভোটের প্রচারের শুরু থেকে এখন মাঝপথ অবধি ৷ বিজেপির লড়াইটা যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, তেমনই তাঁদের নিশানাতেও একজনই, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।