কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: ভোটের মুখে খুন ও টাকা লুঠের অভিযোগে বিজেপি নেতার গ্রেফতারির ঘটনায় চাঞ্চল্য পূর্ব বর্ধমানে। বিজেপি নেতার সঙ্গে ধৃত তাঁর ২ শাগরেদও। দলের নেতাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে, দাবি বিজেপির। গ্রেফতারির প্রতিফলন পড়বে ভোটে, পাল্টা দাবি তৃণমূলের।
লক্ষ্য সোনার বাংলা গড়া। এই স্লোগানকে সঙ্গী করেই বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মোদি-শাহ সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঠিক এই সময়ই বাড়িতে ঢুকে টাকা লুঠ ও এক বৃদ্ধকে খুনের অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম জয়ন্ত সাঁতরা। অভিযুক্ত নেতা বর্ধমান উত্তর বিধানসভা এলাকার বিজেপির শক্তি কেন্দ্র প্রমুখ। একই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি নেতার দুই শাকরেদ সিরাজুল হক মণ্ডল ও গৌতম মণ্ডল নামে ২ দুষ্কৃতীকেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রায়নার পোস্ট অফিস পাড়ার বাসিন্দা জীবনকানাই সেনগুপ্তের বাড়িতে টাকা হাতানোর উদ্দেশ্যে ঢোকেন ওই বিজেপি নেতা ও তাঁর ২ সঙ্গী। বৃদ্ধ বাধা দিলে তাঁকে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ঘটনার ৯ দিনের মাথায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে অভিযুক্ত বিজেপি নেতার এক সঙ্গী সিরাজুল হক মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করেই অভিযুক্ত বিজেপি নেতা জয়ন্ত সাঁতরা ও তাঁর আরেক শাগরেদ গৌতম মণ্ডলকে বর্ধমান থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের দাবি, ধৃতরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। ভোটের মুখে খুন ও লুঠের অভিযোগে বিজেপি নেতা গ্রেফতারের ঘটনায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা।
বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সম্পাদক শ্যামল রায়ের দাবি, ‘জয়ন্ত সাঁতরা আমাদের শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ। পুলিশ তদন্ত করুক। তদন্তে আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করব না। নির্বাচনকে সামনে রেখে এটা শাসকদলের চক্রান্ত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত। কারণ, খুন হয়েছে রায়নাতে, গ্রেফতার করা হচ্ছে বর্ধমান উত্তর বিধানসভা এলাকা থেকে। তার দায়িত্বে ৫-৬টি বুথ আছে। সেটা মাথায় রেখেই তৃণমূল চক্রান্ত করেছে কিনা সেটা মাথায় রাখতে হবে।’
অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘বিজেপি নেতা ডাকাতি করে খুন করে চলে এল। এরা আবার বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বলছে। এর বিচার বাংলার মানুষ করবে। আইন আইনের পথেই চলবে।’
পঞ্চম দফায় ১৭ এপ্রিল পূর্ব বর্ধমানের ৮ কেন্দ্রে ভোট, যার মধ্যে রয়েছে রায়না কেন্দ্রটিও। এখন দেখার, এই ঘটনা ভোটে কতটা প্রভাব ফেলে।