অরিত্রিক ভট্টাচার্য, জয়দীপ হালদার, বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম: ‘নন্দীগ্রামে পরিবর্তন হলে বাংলায় পরিবর্তন হবে,’ দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। ‘লক্ষ্য রাখব,’ নন্দীগ্রামে পাল্টা সতর্কবার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অডিও টেপ নিয়েও বাগযুদ্ধ অব্যাহত দুই তরফে।


হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের এপিসেন্টার এবার নন্দীগ্রাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই দেখতে মুখিয়ে গোটা দেশ। লড়াইয়ে রয়েছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও। আগামী ৫ বছর কার দখলে থাকবে নন্দীগ্রাম, তা ঠিক হয়ে যাবে ১ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিন। সেই সময় যত এগিয়ে আসছে, নন্দীগ্রাম দখল নিয়ে ততই সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল-বিজেপি। অনেকেই বলেন, শত্রুপক্ষের সেনাপতিকে আঘাত হানতে পারলেই যুদ্ধজয় অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপি, তৃণমূলের প্রধান সেনাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাঁড়ানো নন্দীগ্রাম আসনকেই টার্গেট করেছে বিজেপি।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘নন্দীগ্রামে পরিবর্তন হলে বাংলায় পরিবর্তন হবে। নন্দীগ্রামের ভোটারদের আবেদন, আপনারই পরিবর্তন এনেছেন, আপনারা ফের পরিবর্তন করুন। বাংলার ভাগ্য নন্দীগ্রামবাসীদের হাতে।’


নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর হুঙ্কার, ‘১ তারিখে আমি ওপারের বেগমকে হারাচ্ছি। যতই হাত ভাঙুক, পা ভাঙুক, কোনও কিছুতেই কিছু হবে না।’


পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ভোট করে এখান থেকে যাব। এখানে একতলা বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। নন্দীগ্রামের মানুষ ভাড়া দিয়েছেন। অনেক কৃতজ্ঞতা।’


আজ থেকেই নন্দীগ্রামের ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবেন তিনি।


গতকাল প্রথম দফার ভোট চলাকালীন একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে বিজেপি দাবি করে, পরাজয়ের আঁচ পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতিকে ফোন করে, সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন। এদিন দিল্লিতে বসে এ নিয়ে কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘ফোন করে আর কিছু হবে না, পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে তৃণমূল সরকারের।’


ভোটের প্রথম দফার দিনেই পাল্টা অন্য একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে তৃণমূল দাবি করে, টেলিফোনে বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়ার কাছে মুকুল রায় কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, রাজ্যে সব বুথে এজেন্ট বসানোর লোক তাঁদের নেই। এই প্রসঙ্গ টেনে এদিন অমিত শাহদের উপর পাল্টা চাপ তৈরির কৌশলে হেঁটেছে তৃণমূল। 


এ বিষয়ে আজ অমিত শাহকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেছেন, ‘২ বিজেপি নেতার মধ্যে কেউ টেপ দিয়েছে। উনি তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নিজে তদন্ত করে দেখুক না কে লিক করল? বিজেপির তিনটে টিম খেলছে।’


২০১১-তে রাজ্যে পরিবর্তন আনতে সিঙ্গুরের পাশাপাশি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল নন্দীগ্রামের আন্দোলন। এবার অমিত শাহ দাবি করলেন, নন্দীগ্রামে পরিবর্তন এলে বাংলাতেও পরিবর্তন আসবে। কিন্তু নন্দীগ্রামবাসী কাকে চাইছে? উত্তর মিলবে ২ মে।