রাজীব চোধুরী, মুর্শিদাবাদ: ভোট শুরুর পাঁচ দিন আগে সংযুক্ত মোর্চার বাম-কংগ্রেস জোটে ফাটল। মুর্শিদাবাদের নওদা বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আলাদা করে প্রার্থী ঘোষণা করল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব! মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএম তা খারিজ করে দিয়েছে। প্রকাশ্যে বিষয়টিতে আমল দিতে নারাজ কংগ্রেস।


মুর্শিদাবাদের নওদায় কংগ্রেসের প্রার্থীকে মানতে নারাজ স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। আলাদা প্রার্থী দিয়ে লড়াই ঘোষণা করলেন সিপিএমের জেলা কমিটির দুই সদস্য, গোরাচাঁদ বোস এবং শমীক মণ্ডল। 


মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন এবার নওদা আসনে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী ৷ তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসে যোগ দেন মোশারফ ৷ 


অতীতের প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ নওদার সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ। মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সিপিএমের সদস্য শমীক মণ্ডল জানান, ‘‘আমরা প্রার্থী দিলাম। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে নওদায় ভোট লুঠ। মনোনয়নে বাধা। কাউন্টিংয়ে লুঠপাট। নওদায় গণতন্ত্রকে কার্যত ধ্বংস করা হয়। এরাই ঘরের টাকা জবকার্ডের টাকা লুঠ করে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। আর সেই জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী লড়াই করলে আমাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তাই আমরা আমাদের রাজনৈতিক কথা নিয়ে সরাসরি ভোটের ময়দানে।’’


সাংবাদিক সম্মেলন করে শুধু প্রার্থী ঘোষণা নয়! স্থানীয় মানুষের স্বার্থে এদিন আলাদা ইস্তেহারও প্রকাশ করে নওদার সিপিএম নেতৃত্ব। শিক্ষক তথা দলের জেলা কমিটির সদস্য শমীক মণ্ডলকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে শুরু হয়ে যায় প্রচার। 


যাঁকে কেন্দ্র করে জোট ঐক্যে ভাঙন, সেই কংগ্রেস প্রার্থী অবশ্য প্রকাশ্যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে চাননি। নওদার কংগ্রেস প্রার্থী (সংযুক্ত মোর্চা) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘এটা সামগ্রিক ভাবে সিপিএম পার্টির সিদ্ধান্ত নয়। স্থানীয় নেতৃত্বের ব্যক্তিগত মন্তব্য ৷’’


কাস্তে-হাতুড়ি প্রতীক না পেলে নির্দলের প্রতীকে লড়ার হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে নওদার সিপিএম নেতাদের কথায়। তাতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। 


মুর্শিদাবাদ জেলার সিপিএমের সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী বলেন, ‘‘নওদার সিপিএমের এই সিদ্ধান্ত জেলা সিপিএম অনুমোদন করে না। রাজ্যজুড়ে জোট হয়েছে। জোটের পরিপ্রেক্ষিতেই আসন ভাগ হয়েছে। যদি নির্দল হিসেবে দাঁড়ায় তাহলে দল বহিষ্কার করবে ৷’’


মুর্শিদাবাদ জেলার কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘মিলিত সিদ্ধান্তে প্রার্থী ঠিক হয়েছে। সিপিএম নিশ্চয় বিষয়টা দেখবে। এই প্রার্থী আগেই অনুমোদন চেয়েছিল সিপিএমের কাছে। কেউই অনুমোদন দেয়নি। বিষয়টা আমাদের কাছে নতুন নয়। দাঁড়ালে দাঁড়াবে। কোনও প্রভাব পড়বে না ৷’’


২৯ এপ্রিল শেষ দফায় মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে ৷