রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান:
জলস্পর্শ করব না আর'
চিতোর-রানার পণ,
"বুঁদির কেল্লা মাটির পরে
থাকবে যতক্ষণ।'
চিতোরের রানার মতো পণ করে বসেছেন কেতুগ্রামের বিজেপি কর্মী নীলমণি দানা। রাজ্যে বিজেপি সরকার এলেই তিনি পায়ে জুতো পরবেন। এই পণ নিয়ে বহু বছর ধরে খালি পায়েই ঘুরে বেড়ান তিনি।
বর্ষা, গ্রীষ্মের প্রখর রোদও তাঁকে হার মানাতে পারেনি। স্ত্রী ছেলেমেয়েদের অনুরোধও তিনি রাখেননি। রোদের তাপে যেখানে রাস্তার পিচও গলতে শুরু করেছে,সেই সময় কাঁধে বিজেপির পতাকা নিয়ে গ্রামে গ্রামে খালি পায়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে নীলমণি দানা। তাঁর আশা এবার তাঁর মনের ইচ্ছা পূর্ন হতে চলেছে। ২০২১-এ বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। আর সেই দিনই তিনি তার পণ ভেঙে পায়ে নতুন জুতো পরে বিজেপি শাসিত পশ্চিমবঙ্গে ঘুরে বেড়াবেন।
কেতুগ্রামের নিরোলের বিজেপি কর্মী নীলমণি দানা,পেশায় ধুপকাঠি বিক্রেতা। নিজের বিয়ের এক মাস পর থেকে তিনি জুতো পরা বন্ধ করে খালি পায়ে হাটতে শুরু করেন। তার পর থেকেই খালি পায়ে তার হাঁটা শুরু । বাজার হাট তো বটেই, শ্বশুরবাড়ি থেকে আত্মীয়দের বাড়ি সব জায়গাতেই খালি পায়ে যাতায়াত নীলমণি দানার। তার জন্য অনেক কটূক্তি শুনতে হয়েছে তাঁকে। তাতে অবশ্য কোনও ভ্রূক্ষেপ দেননি নীলমণি দানা। তাঁর সোজা উত্তর, সময় এলেই তিনি সবাইকে জানাবেন, কেন জুতো না পরে খালি পায়ে হাঁটেন তিনি।
স্ত্রী বহুবার জুতো পরার জন্য বুঝিয়েছেন স্বামীকে,এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে অনেক রাগারাগিও হয়েছে। বাবা খালি পায়ে হাঁটায় ছেলেমেয়েকে তাদের বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকেও অনেক কথা শুনতে হয়েছে। বাবাকে জুতো না পরার কারণ নিয়ে প্রশ্ন করলেই একটাই উত্তর এসেছে সময় এলে বলবো। এবার হয়তো সেই সময় এসেছে তাই ১৮ বছরের পর জুতো না পরার কারণ জানিয়েছেন নীলমণি দানা। এখন তার পরিবার-সহ ,সকলেই জানেন কেন নীলমণি জুতো পায়ে দিতেন না। নীলমণির এখন ইচ্ছা বিজেপি রাজ্যে সরকার গঠন করার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজের প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়ে জুতো পরবেন।। তবে তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপি কর্মী নীলমণি দানা বিয়ের পর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে জুতো পরা বন্ধ করেছে। আর এখন বিজেপি সেটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে। যদিও তৃণমূলের এই দাবি মানতে চাননি তাঁর স্ত্রী। এখন এটাই দেখার, নীলমণি দানার ইচ্ছা ২ মে-তে পূরণ হয় নাকি। না আরও পাঁচ বছর তাঁকে খালি পায়েই হাটতে হবে দিদির রাজ্যে।