কলকাতা: নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের। সাসপেন্ড মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অধিকর্তা বিবেক সহায়। একইসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন বিভু গোয়েল। পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন জেলাশাসক হলেন স্মিতা পাণ্ডে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড
সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন প্রবীণ প্রকাশ। পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন পুলিশ সুপার হলেন সুনীল কুমার যাদব। নতুন জেলাশাসক হচ্ছেন বিভু গোয়েল।


এর আগে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর পাওয়া যায়, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর কোনও হামলা হয়নি। দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীদের গাফিলতিতেই তিনি আহত হয়েছেন। পর্যবেক্ষকদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে এমনটাই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। এবার কড়া পদক্ষেপ দেখা গেল। 


গত বুধবার নন্দীগ্রামে আহত হন মুখ্যমন্ত্রী তথা নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্ট দেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক। পৃথকভাবে রিপোর্ট দিয়েছিলেন কমিশনের দুই পর্যবেক্ষকও।


নির্বাচন কমিশনকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই দাবি করছে, সমস্ত রিপোর্ট দেখে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর কোনও হামলা হয়নি। নিরাপত্তারক্ষীর একাংশের গাফিলতির কারণেই আহত হন মুখ্যমন্ত্রী। আর এরপরই কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন।


সূত্রের খবর, শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অধিকর্তাকে সাসপেন্ড করা নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিচু স্তরের যে যে অফিসার রয়েছেন, তাঁদের কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, এবং গাফিলতি থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি নীরজনয়ন পাণ্ডেকে। ১৭ মার্চ, বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।


১০ তারিখ ঘটনাস্থলে, স্থানীয় কোনও পুলিশ উপস্থিত ছিলেন না বলে আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, তারাও মনে করছে সেদিনের ঘটনায় গাফিলতি ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশেরও। এই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।


ঘটনার দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। স্বভাবতই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। 


শুক্রবারই নির্বাচন কমিশনকে প্রথম রিপোর্ট পাঠান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আরও কিছু তথ্য জানতে চেয়ে ফের নবান্নকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলে নির্বাচন কমিশন। শনিবার রাজ্যের তরফে দ্বিতীয় রিপোর্টও জমা পড়ে কমিশনে। সেই রিপোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর কী করে আঘাত লাগল, তা লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এই চাপানউতোরের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে পৃথকভাবে রিপোর্ট দিয়েছেন দুই পর্যবেক্ষকও। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, দুই তরফে কমিশনে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা থেকে দাবি করা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলা হয়নি। নিরাপত্তারক্ষীর একাংশের গাফিলতির কারণেই আহত হন মুখ্যমন্ত্রী।