সমিত সেনগুপ্ত ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: এবার মোদি সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প রাজ্যে চালু না করা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ মিঠুন চক্রবর্তীর। পাল্টা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের হয়েই সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর মুখে যখন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, তখনই মহাগুরুর গলায় শোনা গেল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। 

Continues below advertisement

চতুর্থ দফার ভোটের মুখে স্বাস্থ্য কার্ড নিয়ে সম্মুখসমরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তী। তৃণমূল নেত্রী যখন বর্ধমান থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের হয়ে সওয়াল করলেন, তখন নরেন্দ্র মোদির ‘আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে’র হয়ে ব্যাট ধরলেন মহাগুরু! বর্ধমানের সভায় শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সবাই পাঁচ লাখ টাকা পাবে। ভেলোর এইমসেও এই কার্ড দিয়ে চিকিৎ‍সা হবে ৷’’

রাজারহাটের সভায় বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান প্রকল্পে সবাই পাঁচ লাখ টাকা পাবে। এইমসে, চেন্নাইয়ে, ভেলোরে চিকিৎ‍সা করাতে পারবে। কিন্তু, বাংলায় এই প্রকল্প চালু করতে দেওয়া হয়নি। কারণ তাতে প্রধানমন্ত্রীর নাম হবে ৷’’

Continues below advertisement

মেমারির সভায় তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য রাখার সময় দর্শকদের মধ্যে থেকে কয়েকজন জয়-শ্রীরাম স্লোগান দেন!! তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁদের পাল্টা জয় বাংলা বলার পরামর্শ দেন! 

ভোটের বাজারে এখন গ্ল্যামারের ছড়াছড়ি। কোথাও বিজেপি প্রার্থীর হয়ে মিঠুন চক্রবর্তীর রোড শো আবার বারাসতে অভিনেতা-বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে অভিনেতা-সাংসদের রোড শো। তৃণমূল প্রার্থী চিরঞ্জিতের হয়ে ভোট প্রচার করলেন তৃণমূল সাংসদ দেব ৷ এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত , বিজেপির জোড়া ফলা থেকে শুরু করে তৃণমূলের দুই তারকা প্রচারক ৷ সবাই গোটা রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। আর কার্যত ডু অর ডাই-এর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এই ভোটের বাগযুদ্ধে আক্রমণ করতে গিয়ে, অনেকে ভাষার ওপর সবসময় নিয়ন্ত্রণও রাখছেন না।

মন্তেশ্বরের সভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘এমন গুণ্ডা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগে দেখিনি। চোখ দুটো লাল টুকটুক করছে। যেন এই গিলে খেয়ে নেবে। বাপরে বাঘের থেকেও ভয়ঙ্কর !’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজকে দাঙ্গাবাজরা বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে গুন্ডা এনেছে। আর অমিত শাহ কত টাকা আপনার আছে? ভাবছেন চিরদিন এভাবে চলে যাবে! কোটি কোটি টাকা বিলোচ্ছেন! কাড়ি কাড়ি টাকা না! টাকা ছড়াচ্ছেন! ভাবছেন সব কিনবেন টাকা দিয়ে! কিনুন। কত কিনবেন! কতদিন কিনবেন! বলি, এত টাকা পান কোথায়?  এত এত টাকা! কত কত খরচ করেন এক একটা মিটিংয়ে?  হিসেব দেবেন!’’

সাংবাদিক সম্মেলনে শুক্রবার বিজেপি প্রাক্তন সর্বভাবরতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘উনি যদি সহজ বিষয়টা বুঝতে না পারেন, তাহলে ধরে নেব উনি অস্থায়ী হয়ে পড়ছেন ৷’’

সব মিলিয়ে ভোটের লড়াই যত এগোচ্ছে, কথার লড়াইয়ের ঝাঁঝও বাড়ছে।