রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: টাকা নিয়ে বহিরাগতকে প্রার্থী করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। এবার কাটোয়ায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই এমনই মারাত্মক অভিযোগ তুললেন কংগ্রেসের একাংশ। চলল বিক্ষোভ। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা মানহানির মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।


মালদা, পশ্চিম বর্ধমানের পর পূর্ব বর্ধমান।ফের টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করার অভিযোগ উঠল কংগ্রসে। এবার দলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যর দিকে আঙুল তুললেন কর্মীদের একাংশ। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও সামিল হলেন তাঁরা। কাটোয়া বিধানসভা কেন্দ্রে  জেলা সভাপতি প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। তিনি বর্ধমান শহরের বাসিন্দা। এখানেই আপত্তি দলের একাংশের। জেলা সভাপতিকে বহিরাগত তকমা দিয়ে, ভূমিপুত্র রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। তিনি হলেন কাটোয়ার বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক ও প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ভাইপো।


গত ২২ ফেব্রুয়ারি, তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তখন থেকেই কাটোয়া বিধানসভা আসনে ভোটে কাকা-ভাইপোর লড়াইয়ের জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রণজিৎকে প্রার্থী না করায়, মঙ্গলবার কাটোয়ার সার্কাস ময়দানে বিক্ষোভ দেখান দলেরই একাংশ। কাটোয়ার তৃণমূলত্যাগী কংগ্রেস নেতা রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হয়ত কাকার হাত রয়েছে, প্রদীপ ভট্টাচার্য তৃণমূলের থেকে টাকা খেয়ে প্রার্থী ঠিক করেন।’’


কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ, প্রার্থী ঠিক করা হয় দিল্লি থেকে, আমার কোনও হাত নেই।যারা এই অভিযোগ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি, মানহানির মামলা করব।’’


শীর্ষ নেতৃত্ব যাই দাবি করুক না কেন, কাটোয়ার প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। তবে সমস্যা মিটে যাবে বলে আশাবাদী প্রার্থী। সাংবাদিক বৈঠকে কাটোয়া শহরের কংগ্রেসের সম্পাদক শুভাশিস সামন্ত বলেন, ‘‘রাজ্য জোর করে বহিরাগতকে প্রার্থী করেছেন, সেই কারণে কংগ্রেসের কোনও কর্মী ওনার হয়ে প্রচার করবেন না।’’


কাটোয়ার কংগ্রেস প্রার্থী প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা ক্ষণিকের রাগ, সব মিটে যাবে, সবাই একসঙ্গে প্রচারে নামবে ৷’’


কাটোয়া আসনটি বরাবরই ছিল কংগ্রেসের দখলে। কিন্তু ২০১৬-র ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন এই কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬-তে তৃণমূলের হয়েও জেতেন তিনি। কিন্তু গড় ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে ঝাপানোর বদলে, এখন প্রার্থী নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে জেরবার হাত শিবির।