সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ওপরে ছবি, আর নীচে লেখা- ‘আমি সুদীপ বিশ্বাস, পঞ্চায়েত বিক্রি করে খেয়েছি’। একটি-দুটি নয়। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এরকম অসংখ্য পোস্টার! কোনওটায় আবার লেখা, ‘পঞ্চায়েত বিক্রি করা সুদীপ বিশ্বাস কে মানছি না!’


আবার কোথাও লেখা হয়েছে, ‘বিজেপি বাঁচাও, দুর্নীতিবাজদের হাটাও’! ভোটের মুখে সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বাজার, গোপালপুর মোড়, মল্লিকপুর বাজার-সহ একাধিক এলাকায় এরকম পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে!


যাঁর নামে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে, সেই সুদীপ বিশ্বাস হলেন বিজেপির গাইঘাটা পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি! এদিন সাতসকালে পোস্টারগুলি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। কোনও নাম না থাকলেও এই ঘটনায় অভিযোগ উঠছে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকেই! কিন্তু কারা দিল এধরনের পোস্টার? দলীয় কোন্দল, না ভোটের মুখে অন্য দলের ষড়যন্ত্র? বিজেপির মণ্ডল সভাপতি কিন্তু কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেননি! বিষয়টিকে তৃণমূলের চক্রান্ত বললেও,  নেপথ্যে দলের কারও হাত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ তাঁর!


গাইঘাটা পশ্চিম মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি সুদীপ বিশ্বাস জানান, ‘‘আমি লোকসভা ভোটে এখান থেকে হায়েস্ট লিড দিয়েছি। তাই দল আমায় ফের দায়িত্ব দিয়েছে। তাতেই তৃণমূল ভয় পেয়ে এসব করছে। আমাদের কিছু কার্যকর্তাও এরসঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।’’


বিজেপির অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। তাদের পাল্টা দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই পোস্টার পড়েছে। গাইঘাটার তৃণমূল কংগ্রেস কনভেনার ধনেশনারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘মানুষ ২০১৯-এর ভুল আর করবে না। গাইঘাটা তৃণমূলের মাটি। ওদের এসব পোস্টারে তৃণমূলের কোনও হাত নেই। এটা শান্তনুর সঙ্গে বিজেপির লড়াইয়ের ফল।’’


২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গাইঘাটা আসনটি সাড়ে ২৯ হাজারের বেশি ভোটে জেতে তৃণমূল! সেখানে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফল অনুযায়ী তৃণমূলে পিছনে ফেলে প্রায় ৩৬ হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ২১-এর ভোটের মুখে এহেন গাইঘাটাতেই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার!