মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান: প্রথমে প্রার্থী করার দাবি, তারপর প্রার্থী না করার! এক সপ্তাহের মধ্যে বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে দু’রকম পোস্টার পূর্ব বর্ধমানের একাধিক অঞ্চলে। যা নিয়ে ভোটের আগে চরমে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর।
মাঝে মাত্র চার দিনের ব্যবধান। এর মধ্যেই বর্ধমান পূর্বের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে দু’রকম পোস্টার পড়ল একই অঞ্চলে! সোমবার বুদবুদ, পানাগড় এবং মানকর বাজারে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগদানকারী সুনীল মণ্ডলকে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী করার দাবিতে পোস্টার পড়েছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘উন্নয়নের জন্য সুনীল মণ্ডলকে গলসির জনগণ চায়।’ এক পাশে সুনীল মণ্ডলের ছবি ও অন্যদিকে বিজেপির প্রতীক দেওয়া সেই পোস্টারের নীচের দিকে লেখা ছিল, ‘গলসি বিধানসভার জনগণ।’
কিন্তু, আজ সকালে প্রায় একই জায়গাগুলিতে দেখা গিয়েছে এই পোস্টার, যেখানে সুনীল মণ্ডলকে প্রার্থী না করার দাবি করা হয়েছে। পোস্টারের নীচে সেই একই লেখা, ‘গলসি বিধানসভার জনগণ।’
ভোটের আগে একই অঞ্চলে সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে দু’রকম পোস্টার পড়া নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলকেই এই ঘটনার নেপথ্য দায়ী করেছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি জেলা সভাপতি রমন শর্মার দাবি, ‘এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। বিজেপি উন্নয়নের অনেক কাজ করেছে। যাদের পায়ের তলায় মাটি নেই, তারা এসব করছে ৷’
যাঁকে নিয়ে এই পোস্টার পড়েছে, সেই সুনীল মণ্ডলও এই ঘটনার দায় চাপিয়েছেন তৃণমূলের উপরেই। বর্ধমান পূর্বের সাংসদ ও বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডল বলেছেন, ‘তৃণমূলের প্রার্থী নেপাল ঘোড়ুইকে পছন্দ করছে না কিছু লোক। তারাই এসব করে বিজেপি-র বদনাম করার চেষ্টা করছে। বিজেপি-র কেউ এর সঙ্গে যুক্ত না।’
তিনি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক কি না, এই প্রশ্নের জবাবে সুনীল মণ্ডল বলেছেন, ‘আমি তো সাংসদ। কী করে প্রার্থী হব?’
এ বিষয়ে বিজেপি-র অভিযোগ মানতে নারাজ শাসক দল। পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি মহম্মদ জাকির হোসেন বলেছেন, ‘এটা বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। আমাদের ওসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। আমরা উন্নয়নকে হাতিয়ার করে ভোট করব। আমাদের দলই ভোটে জিতবে।’
যে অঞ্চলে পোস্টারগুলি পড়েছে, সেটি পূর্ব বর্ধমানের গলসি বিধানসভার অন্তর্গত। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূল গলসিতে বড় ব্যবধান জিতলেও, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে গলসিতে ভাল লিড রয়েছে বিজেপির। আগামী ২২ এপ্রিল ষষ্ঠ দফায় গলসি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ।