দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাজ্যের ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়নি। এরইমধ্যে রাজ্যে তুঙ্গে উঠেছে ভোটের প্রচার। বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষগুলির মধ্যে দ্বৈরথ জমে উঠেছে। এরইমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বৃহস্পতিবার চরমে উঠল তৃণমূল ও বিজেপির বাকযুদ্ধ। এদিন নামখানায় সভা করে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পাল্টা পৈলানে জনসভায় তাল ঠুকলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।


দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানের জনসভায়  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বহিরাগত প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিধানসভা ভোটে দঃ ২৪ পরগনায় ৩১-এ ৩১ করতে হবে।এবার লড়াই বাংলাকে রক্ষা করার লড়াই। এবারের লড়াই শুধু বহিরাগতদের বিরুদ্ধে নয়।মাঠে-ময়দানে আমরা আছি, বুক চিতিয়ে লড়তে হবে। যেখানে ডাকবেন সেখানেই যাব, দঃ ২৪ পরগনায় ৩১-এ ৩১ করতে হবে।এবার ভোটে ২৫০টি আসনে জিততে হবে। বহিরাগতরা আবার গুজরাতে ফিরে যাবে'।


অমিত শাহ দাবি করেছেন, আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত। বিজেপিই ক্ষমতায় আসব। তাঁর এই দাবিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেছেন,  ‘যারা বাংলা লিখতে, পড়তে জানে না, তারা বাংলা দখল করবে!’


অমিত শাহর মুখে এদিনও শোনা গিয়েছে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতিকেও নিশানা করেছেন অভিষেক। তিনি বলেছেন, বিজেপি কেন্দ্রে সাত বছর ক্ষমতায় রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “এতদিনও সোনার ভারতবর্ষ হয় নি কেন?এই ভাঁওতায় বাংলার মানুষ পা দেবে না ।


নামখানায় এদিন অমিত শাহ বলেছেন, ‘ক্ষমতায় এলে ৪ লক্ষ মৎস্যজীবীকে কিষাণ নিধির মতো সুবিধা দেওয়া হবে। মাসে এঁদের ৬ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই দাবিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেছেন,  অমিত শাহ কাকদ্বীপে সভা করে বলছেন, ৪ লক্ষ মৎস্যজীবীকে টাকা দেব। কিন্তু ওরা শুধু বলছেন, ক্ষমতায় আনুন। ভারতবর্ষকে কী করেছেন?’


কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্প রাজ্যে চালু না হওয়া নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা। পাল্টা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকে হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। এদিন অভিষেক বলেন, দেশের মাত্র ১ কোটি ১২ লক্ষ মানুষকে আয়ুষ্মান প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে  ১০ কোটি পাচ্ছেন স্বাস্থ্য সাথী। অনেকে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, পা দেবেন না।৮ বছরে মোদি সরকার কী করেছে, রিপোর্ট কার্ড কোথায়?দিলীপ ঘোষের বাড়ির লোকেরাই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করাচ্ছেন।আগে নিজের বাড়ি সামলান, তারপরে অন্য কিছু ভাবুন।বাংলার টাকা কেন্দ্র কেটে নিয়ে যাচ্ছে, সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে?’


ভোটের আগে তৃণমূলের একাধিক নেতা গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। এ নিয়েও বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অভিষেক। তিনি বলেছেন,‘তৃণমূল থেকে নেতা ভাঙিয়ে দল করতে হচ্ছে বিজেপিকে।নেতা ধার করে ভোটে লড়তে চাইছে তারা।’