গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: ভোটের প্রচারেও তৃণমূলের কাঁটা হয়ে দাঁড়াল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। কার্ড থাকলেও বিনামূল্যে পরিষেবা মেলেনি, সিউড়িতে তৃণমূল প্রার্থীর সামনে এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দিলেন এক চা বিক্রেতা। খতিয়ে দেখার আশ্বাস তৃণমূল প্রার্থীর।


সকল রাজ্যবাসীর জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, বিধানসভা ভোটের আগে এই প্রকল্পের ঘোষণা করে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। কিন্তু বীরভূমে ভোটের প্রচারে তৃণমূলের কাছে কাঁটা হয়ে দাঁড়াল সেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পই! প্রার্থী ঘোষণার পর রবিবার প্রচারে নামেন সিউড়ির তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে, এক চা বিক্রেতার কাছে ভোট চাইতে যেতেই ক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি।


নীরঞ্জন লাহা নামে স্থানীয় ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের দেখা গেলেও, ভোট মিটে গেলে আর দেখা মেলেনি তৃণমূলের বিধায়ক-সাংসদ কাউকেই। সিউড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্য এক চা বিক্রেতার কথায়, ‘‘আপনি এসেছেন আপনার দরকার, কিন্তু আমাদের যখন দরকার হবে, তখন পাত্তা পাওয়া যাবে না। ভোট দিয়ে আসছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও উপকার পাইনি। আমার ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেও চাকরি পায়নি ৷’’


এরপরই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের উপকার না পেয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন এই চা বিক্রেতা। সিউড়ির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিকাশ রায়চৌধুরী জিজ্ঞেস করেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়েছেন তো? তাহলে, ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পাবেন৷’’ আরেক চা বিক্রেতার কথায়, ‘‘আমার ভাইয়ের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড আছে। কিন্তু দুর্গাপুরে যখন গেল অপারেশন করতে, কিছুই হল না।’’


মানুষের ক্ষোভ যে রয়েছে, তা এদিন স্বীকার করে নেন শাসকদলের প্রার্থী। সিউড়ির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিকাশ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘ক্ষোভ রয়েছে, বিধায়ককে পাননি বলে, কিন্তু দলের কর্মীরা তো পাশে থেকেছে, দেখতে হবে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করব৷’’


বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার অভিযোগ নতুন নয়। ফের ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ মেটাতে কি কোনও পদক্ষেপ নেবে, তৃণমূল সরকার? সেদিকেই তাকিয়ে কোটি কোটি মানুষ।