কলকাতা:  ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি।মাস তিনেক ধরে পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোলের প্রাক্তন মেয়রের রাজনৈতিক  রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা চলছিল।  অবশেষে তিনি যোগ দিলেন বিজেপিতে। 


ডিসেম্বর থেকে বেশ কয়েকবারই ডিগবাজি খেয়েছেন জিতেন্দ্র (Jitendra Tiwari)। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার হুগলির বৈদ্যবাটিতে বিজেপির (BJP) সভায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত থেকে তুলে নিলেন গেরুয়া পতাকা।


WB Election 2021:‘মনের কথা বলতে পারছিলাম না’, বিজেপিতে যোগ দিয়ে মন্তব্য জিতেন্দ্রর


এর আগে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। লোকসভা নির্বাচনে জিতেন্দ্রর সঙ্গেই লড়াই হয়েছিল তাঁর। এদিন জিতেন্দ্রর দলে যোগদানের  সম্ভাবনা তৈরি হতেই  বাবুলের গলায় ছিল নরম সুর। বলেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কাজ করতে চাইলে পুরনো বৈরিতা ভুলে স্বাগত জানাচ্ছি।  



এর আগে কয়েক মাস আগে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন জিতেন্দ্র। রাজনৈতিক কারণে আসানসোল পুরসভাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, এই অভিযোগে তুলে পুরমন্ত্রীকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে গত ডিসেম্বরে চিঠি দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।


এরপরই ১৭ ডিসেম্বরে একে একে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতি ও আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ ছেড়ে দেন। দল ছাড়ার ঘোষণাও করেন তিনি। দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেছিলেন, কলকাতার নেতারা চান না আমি দলে থাকি, তাই আমি দল ছাড়লাম।



দলত্যাগের পরই বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা বাড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে যান পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। 



কিন্তু, তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এই আঁচ করে এর বিরোধিতা করে কড়া মন্তব্য করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, অগ্নিমিত্রা পাল, সায়ন্তন বসু। মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা তীব্র হলেও, শেষপর্যন্ত তা হয়নি।


আর দলত্যাগের ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুর বদলে তৃণমূলেই আছেন বলে জানান জিতেন্দ্র তিওয়ারি।



কিন্তু, তৃণমূলে ফিরলেও, পুরনো জায়গা আর ফিরে পাননি আসানসোলের দাপুটে নেতা জিতেন্দ্র।দলের অধিকাংশ কর্মসূচিতেই ডাক পাননি জিতেন্দ্র তিওয়ারি।পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের নতুন কমিটিতেই জায়গা হয়নি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়কের।আসানসোলের পুর প্রশাসক ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদেও তাঁকে ফেরানো হয়নি।এমনকি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের কোঅর্ডিনেটর করা হয় পাশের কেন্দ্রের বিধায়ককে।


শেষমেষ জিতেন্দ্র তিওয়ারি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন।


তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব  পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, যাঁরা গেছেন বা যাচ্ছেন, তাঁদের পস্তাতে হবে বলে দিতে পারি, যে যায় যাক, মমতার প্রতিই জনতার আস্থা, সেটাই আসল।