মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপিতে যোগদানের পর পাণ্ডবেশ্বরে এককাট্টা হল তৃণমূল। তৃণমূলের দুই বিবদমান ব্লক সভাপতি একসঙ্গে নামলেন প্রচারে। জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে যে অস্বস্তি রয়েছে তাও বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপি। জেলা রাজনীতিতে দু’জনেই ছিলেন একে অপরের পরিপূরক, ছায়াসঙ্গী...বিজেপিতে যোগ দিতেই একদা সতীর্থ জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন লাউদোহা ফরিদপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়। জিতেন্দ্রর সুপারিশে পাণ্ডবেশ্বরের কয়লা খনি এলাকায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব পান সুজিত। বৃহস্পতিবার সেই দায়িত্বও ছেড়ে দেন তিনি।
লাউদোহা-ফরিদপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় জানান,যে লোক দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তার সঙ্গে কোনেও আপস নয়। বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকলেও ভিতরে কালো থাকবে জিতেন্দ্র তিওয়ারি ৷
পাণ্ডবেশ্বর ও লাউদোহা-ফরিদপুর ব্লক নিয়ে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা। বিধায়ক থাকাকালীন পাণ্ডবেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে আকচাআকচি লেগেই ছিল জিতেন্দ্র তিওয়ারির। বিধায়ক অনুগামী হিসেবে পরিচিত লাউদোহা ফরিদপুর ব্লক সভাপতির সঙ্গেও দ্বন্দ্ব ছিল নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। জিতেন্দ্র তিওয়ারির দল ছাড়তেই বদলেছে সমীকরণ। দ্বন্দ্ব ভুলে কাছাকাছি এসেছেন তৃণমূলের দুই ব্লক সভাপতি। একসঙ্গে দেওয়াল লিখে শুরু করলেন প্রচার। পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, ‘‘আমরা একসঙ্গে দেওয়াল লিখন শুরু করেছি, মমতা ব্যানার্জির যাঁকে প্রার্থী করবেন তাঁকে আমরা জেতাব ৷’’
একদা ঘনিষ্ঠের তীর্যক মন্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাননি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে দলে যে এখনও অস্বস্তি রয়েছে তা স্পষ্ট বিজেপি নেতৃত্বের গলায়। পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্রীরূপ চক্রবর্তী জানান, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে মানুষ পছন্দ করত না, উনি বহিরাগত, দুই ব্লক সভাপতির মধ্যে গন্ডগোল ছিল, তাই উনি বুঝেছেন বিজেপিতে এলে উন্নয়ন করতে পারবেন তাই এসেছেন ৷’’
আগামী ২৬ এপ্রিল ভোট পাণ্ডবেশ্বরে ৷ গত লোকসভা ভোটের নিরিখে পাণ্ডবেশ্বরে ৬ হাজার ২১ ভোটে এগিয়ে বিজেপিভোটের মুখে জিতেন্দ্র তিওয়ারির দলবদলের পর বিবাদ ভুলে তৃণমূলের দুই ব্লক সভাপতির এককাট্টা হওয়া কি ভোটে প্রভাব পড়বে? তা নিয়ে নানা আলোচনা পাণ্ডবেশ্বরে।