কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতি, গরুপাচার, একের পর এক মামলায় নাম জড়িয়েছে দলের নেতা-মন্ত্রীদের। ঘন ঘন কেন্দ্রীয় তদন্তাকরী সংস্থার ঘরে ডাক পড়ছে অন্য নেতাদেরও। সেই নিয়ে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে এসেছেন বিরোধীরা। কিন্তু তৃণমূলের ভোটবাক্সে তার কোনও প্রভাবই পড়তে দেখা যাচ্ছে না আপাতত। মঙ্গলবার  দুপুর ১২টা বেজে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে জোড়াফুল শিবির। বাংলায় ৩০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চলা বিজেপি ১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে একটি আসনে। (West Bengal Loksabha Elections Result)


লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব থেকেই এযাবৎ বাংলায় ক্ষমতাবৃদ্ধির দাবি করে এসেছে বিজেপি। রাজ্যে ৩০টির বেশি আসন পাওয়া থেকে এবার তাদের কেউ আটকাতে পারবে না বলে দাবি উঠেছে গেরুয়া শিবির থেকে। প্রায় সমস্ত বুথফেরত সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছিল, বাংলায় বিজেপি ৩০টির কাছাকাছি আসন পাবে। কিন্তু এদিন দুপুর পর্যন্ত সেই লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে বিজেপি। বরং তৃণমূল কখনও ২৯ থেকে ৩০, কখনও আবার ৩১টি আসনে এগিয়ে গিয়েছে। (TMC Elections Result in West Bengal)


এদিন দুপুর ১২টা বেজে ৩০ মিনিট পর্যন্ত যে হিসেব সামনে এসেছে, সেই নিরিখে, ২ লক্ষ ৬৫ হাজার ভোটে ডায়মন্ড হারবারে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরে ১১ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন জুন মালিয়া। ঘাটালে ৩৭ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন দেব। কলকাতা দক্ষিণে মালা রায় এগিয়ে রয়েছেন ৯৮ হাজার ভোটে। 


আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Loksabha Elections Result: 'রামরাজ্যে'ই ধাক্কা, অর্ধেকেরও কমে নেমে এল বিজেপি, মোদি-যোগীর শীতল সম্পর্কই কি দায়ী?


মথুরাপুরে ৬৫ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের বাপি হালদার। বসিরহাটে তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল এগিয়ে ১ লক্ষ ৪২ হাজারের বেশি ভোটে। শ্রীরামপুরে ৮ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যারাকপুরে ৩৩ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন পার্থ ভৌমিক। যাদবপুরে সায়নী ঘোষ এগিয়ে রয়েছেন ৪৫ হাজার ভোটে। 


এবারের লোকসভা নির্বাচনেব বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং তুষ্টিকরণের অভিযোগকে হাতিয়ার করেছিল বিজেপি। এর পাল্টা, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, বাংলা বিরোধী আচরণ এবং মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি-র বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল তৃণমূল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছিলেন, যত কমই হোক না কেন, ২০১৯ সালের চেয়ে একটি বলেও বেশি আসন পাবেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত ভোটবাক্সে অভিষেকের সেই দাবিতেই সিলমোহর পড়ার ইঙ্গিত মিলছে। এর আগে, ২০১৪ সালে তৃণমূল ৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। ২০১৯ সালে তা কমে ২২-এ এসে পৌঁছয়। এবার তার্যতই হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের পথে তৃণমূল।