কলকাতা: রিল নয়, রিয়েল লাইফেও ছিলেন বাবা। অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের (Abhishek Chatterjee Demise) প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পর্দার মেয়ে তৃণা সাহা (Trina Saha)। কথা বলতে গিয়ে গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসছে। অঝরে কেঁদে চলেছেনপর্দার ‘গুনগুন।’ অভিনেত্রী জানালেন, বাবার মতোই বকাঝকা করতেন। এমনকী ডাকতেন ড্যাডি বলেই। তিনি বলেন, “রিয়েল লাইফেও ড্যাডি বলতাম। বাবার মতোই বকাবকি করতেন। পরশু শ্যুট করেছি। উঠতে পারেনি। দাঁড়াতে পারেনি। কাঁপছিল। আমরা এক বছর ধরে বলে আসছি সাবধানে থাকো। সবসময় বলতো আমি ফিট এন্ড ফাইন আছি।‘’
প্রয়াত অভিষেক চট্টোপাধ্যায়: মায়ার বাঁধন কাটিয়ে চলে গেলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। বাংলা বিনোদন দুনিয়ার আর একটি তারা নিভে গেল। আনোয়ার শাহ রোডের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। বুধবারেও শ্যুটিং করছিলেন তিনি। তবে দুপুর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফিরে আসেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিবর্তে নিজের বাড়িতেই চিকিৎসা করাতে চান তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রাত ১ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে ট্যুইট করে শোকবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোকস্তব্ধ তৃণা সাহা: এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ও তৃণা সাহা। যেখানে তৃণার বাবার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে প্রয়াত অভিনেতাকে। তবে বাবা মেয়ের সম্পর্ক থেমে থাকেনি লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের সামনে। রিল লাইফের জাল পেরিয়ে রিয়েল লাইফে ততটাই দৃঢ় ছিল বাবা-মেয়ের বন্ধন। অভিনেতার প্রয়াণে কথা বলতে গিয়ে এদিন বারবার শব্দ হারিয়ে ফেলছেন অভিনেত্রী। নিজেই জানালেন বাবা মেয়ের সম্পর্ক ছিল বাস্তবের জীবনেও। ড্যাডি বলেই ডাকতেন অভিষেককে।
বাংলা সিনেমায় একটা সময়ে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। ১৯৮৬-তে তরুণ মজুমদারের ছবি পথভোলা দিয়ে তাঁর সিনেমায় যাত্রা শুরু। এরপর ‘ওরা চারজন’, ‘অমর প্রেম’, ‘ইন্দ্রজিৎ’, ‘মায়াবিনী’, ‘শক্তি’, ‘রাজার রাজা’ ‘সংঘর্ষ’, ‘লাঠি’, ‘ভাই আমার ভাই-এর মতো বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন। দহন, বাড়িওয়ালি, আলোর মতো একাধিক ছবিতে তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সিনেমার পর বাংলা টেলিভিশনেও নজর কেড়েছেন অভিষেক। ‘টাপুর টুপুর’, ‘আঁচল’, ‘চোখের তারা তুই’, ‘অন্দরমহল’, ‘মোহর’, ‘খড়কুটো’-র মতো বহু ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।