কলকাতা: ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে সদ্য় মুক্তি পাওয়া গান 'যুদ্ধাং দেহি', আর কুস্তির ফ্লোরে লড়ছেন দুই কুস্তিগীর। ভুল হল, একজন কুস্তিগীর, আরেকজন অভিনেতা। তবে ফারাক করা কঠিন। কারণ অভিনেতা কুস্তিগীরকে তুলে পাকা খেলোয়াড়েপর মত আছড়ে ফেললেন মাটিতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় 'গোলন্দাজ' ছবির জন্য নিজের প্রস্তুতির ছোট্ট ভিডিও ভাগ করে নিলেন দেব ওরফে রুপোলি পর্দার নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী।


গতকালই মুক্তি পেয়েছে এসভিএফের ব্যানারে তৈরি 'গোলন্দাজ' ছবির প্রথম গান 'যুদ্ধং দেহি'। কথায়, খুনসুটিতে উঠে এল 'গোলন্দাজ' এর নেপথ্য কাহিনী। বাংলার ফুটবলের জনক নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে নিয়ে ছবির গল্প বুনেছেন পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়। গান মুক্তির দিন মঞ্চে উঠেই দেবের স্বীকারোক্তি, 'অর্ধেকের বেশি বাঙালি জানেনই না আমাদের ফুটবলের জনকের গল্প। এই ছবির চিত্রনাট্য আসার আগে আমিও জানতাম না। কিন্তু ধ্রুবদা যেভাবে এই গল্পটা বলার দায়িত্ব নিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।'


অন্যদিকে ফুটবলের পাশাপাশি ছবিতে জমে উঠেছে দেব আর ঈশা সাহার রসায়ন। এদিন নায়িকার কথা উল্লেখ করতেও ভোলেন না দেব। বলেন, 'ঈশা এই সময়ের একজন অন্যতম শক্তিশালী অভিনেত্রী। আর ধ্রুবদার পরপর তিনটি ছবির নায়িকা ও। অদ্ভুত ব্যপার ওর সঙ্গে পর্দায় আমায় ভালোই মানিয়েছে। সব প্রজন্মের নায়িকাদের সঙ্গে পর্দায় মানানো কিন্তু ভালো।' কথা শেষ করেই হেসে ফেলেন দেব।


আর শ্য়ুটিং এর গল্পের ঝুলি খোলেন পরিচালক নিজেই। তাঁর কথায়, 'নগেন্দ্রপ্রসাজ সর্বাধিকারীর সঙ্গে দেবের অদ্ভুত সাদৃশ্য রয়েছে। তাই ওকে ছাড়া আমি এই ছবি করার কথা ভাবতেই পারতাম না।' এরপর শ্যুটিং ফ্লোরের দুটি ঘটনার কথা তুলে ধরেন ধ্রুব। ক্যামেরার সামনে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ের আঙুলে চোট লাগে দেবের। সেই চোট অগ্রাহ্য করেই টানা দু দিন ফুটবল খেলার দৃশ্যের শ্যুটিং করেন দেব। তৃতীয় দিন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগ পান পর্দার নগেন্দ্রপ্রসাদ। পরীক্ষা করে দেখা যায়, পায়ের আঙুল ভেঙে গিয়েছে দেবের। মঞ্চে এই কথা শুনে তৎক্ষণাদ দেবের স্বীকারোক্তি, তিনি ফুটবল খেলতে জানেন না বলেই এই কাণ্ড করেছিলেন।


ট্রেলারেই দেখা গিয়েছে একটি কুস্তির দৃশ্যের ঝলক। ধ্রুব বলছেন, 'শেষদিনের শ্যুটিং ছিল ওটা। প্রথম শট দিতে দিতেই দেব হঠাৎ হাত নাড়তে শুরু করে। প্রশিক্ষণ নিলেও, দেব তো কুস্তিগীর হয়ে যায়নি। ওর বিপরীতে একজন পেশাদার কুস্তিগীর। তাঁর হাঁটু এসে লাগে দেবের পাঁজরে। নিঃশ্বাস নিতে পারছিলেন না দেব। মুহূর্তের মধ্যে ফুলে লাল হয়ে যায় পাঁজর। মাত্র আধঘণ্টার বিশ্রাম নিয়েছিলেন দেব। তারপর সেই আঘাত নিয়েই রাত ৩টে পর্যন্ত টানা শ্যুটিং চলেছিল। শট শেষ হয়ে যাওয়ার পর সমস্ত কুস্তিগীররা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়েছিলেন দেবের কুস্তি দেখে।'


আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই কুস্তির প্রস্তুতির ভিডিওই ভাগ করে নেন দেব। লেখেন, ' আমি 'গোলন্দাজ' ছবিটির জন্য নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আশা করি আমি এই চরিত্রটার প্রতি সুবিচার করতে পেরেছি। আমার কুস্তির কোচতে আন্তরিক ধন্যবাদ'