মুম্বই: ‘সুপারহিট’ ছবি করেও একটা সময়ে একেবারেই বেকার ছিলেন সিরিয়ালের জনপ্রিয় ‘কেডি পাঠক’ অর্থাৎ রনিত রায়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন যে প্রতিটা নতুন চরিত্রের সঙ্গে তিনি খানিকটা করে নিজেকে গড়ে তোলেন। হিট ছবি দেওয়ার পরও ইন্ডাস্ট্রিতে পাকা জায়গা করতে পারেননি। কিন্তু ধৈর্য্য হারাননি।


রনিত বলেছেন যে এমন সময়ও গিয়েছে যখন ডাল-রুটি খেয়ে বেঁচে থাকাই যেন প্রায় কঠিন হয়ে পড়েছিল, কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। অপেক্ষা করে গিয়েছেন আবার সুযোগ আসার। ছবিতে যখন সুযোগ কমেছে, তিনি সিরিয়ালের দিকে সরে গিয়েছেন।


আবার সাম্প্রতিক সময়ে যুগের হাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করলেন ওয়েব সিরিজেও। রনিত বিশ্বাস করেন সকলের জীবনে দ্বিতীয়বার সুযোগ হয়ত আসে না, দাঁতে দাঁত চেপে প্রতীক্ষায় থেকে তিনি দ্বিতীয় সুযোগ পেয়েছেন জীবনে। চেষ্টা করেছেন নিজেকে ফের প্রমাণ করার ।


১৯৯২ সালে ‘জান তেরে নাম’ ছবি দিয়ে হিন্দি সিনেমায় অভিষেক হয় রনিত রায়ের।। এরপর কাজ করেন তামিল, তেলুগু, বাংলা সিনেমায়। তবে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ‘আদালত’ ধারাবাহিকে কেডি পাঠক হিসেবে। বাংলাদেশের ছবিতেও কাজ করেছেন।


বর্তমানে ভারতীয় ধারাবাহিকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন তিনি। তবে একসময় সুপারহিট ছবি উপহার দেওয়ার পরও ৬ মাস কোনও কাজ পাননি ‘আদালত’ খ্যাত এই অভিনেতা।


রনিত জানান, ‘জান তেরে নাম’ সুপার হিট হয়। আজকালকার দিনের ১০০ কোটি টাকার ছবি। প্রথম ছবি এই স্তরের ছিল। তারপর আচমকাই ৬ মাস কোনও কাজ পাইনি। বেশ কিছু ছোটখাটো কাজ করেছিলাম সেই সময়। প্রায় ৩ বছর ধরে সেগুলোই করে গিয়েছি। ৯৬ সাল পর্যন্ত।’


তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় বছর চারেক আমি বাড়িতে বসে ছিলাম। আমার একটা ছোট গাড়ি ছিল কিন্তু পেট্রল ভরার টাকা ছিল না। বাড়ি পর্যন্ত হেঁটে যেতাম। সেখানে গিয়েই খেতাম। সিলভার জুবিলি ফিল্মে কাজ করার পরও আমার কাছে কোনও টাকা ছিল না।


আমি কিন্তু মেরে ফেলিনি নিজেকে। আমি কাউকে বিচার করছি না। প্রত্যেকে জীবনে আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয় কখনও না কখনও। কিন্তু ভেঙে পড়িনি।’ আর ভেঙে পড়েননি বলেই তিনি একসময়ে ‘উড়ান’, ‘আগলি’-র মতো ছবিতে কাজ করে প্রশংসা পেয়েছেন ফিল্ম-বোদ্ধাদের।


তিনি বলেছেন, আমি ঠিক লোকের কাছে ঘুরে তৈলমর্দন করে কাজ করতে বা চাইতে পারি না। স্বাভাবিক ভাবেই আমাকে অন্যদের থেকে বেশি কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। সেভাবেই আমি মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখি সবসময়। এরপরও দেখেছি আমারও কিছু ভক্ত, ফ্যান আছেন। তখন মনে হয়েছে, আমি ভুল করিনি।