কলকাতা: সাদা-কালো স্ক্রিনে মোবাইল হাতে বসে আছেন নায়িকা। গম্ভীর মুখ, হাতে মোবাইল। একের পর এক পড়ে চলেছেন তাঁর ছবিতে আসা কমেন্ট! কমেন্ট নাকি কটাক্ষ? পোশাক থেকে জীবন-যাপনের অভ্যাস, সমস্ত কিছু নিয়েই প্রশ্নের পর প্রশ্ন। এরমধ্যে একটি কমেন্টে লেখা, ‘অভিনয়ে টিকতে পা পেরে অশ্লীলতার পথ বেছে নিলেন মধুমিতা’। কমেন্ট পড়া শেষ করে ক্যামেরার দিতে সোজাসুজি চোখ তুলে তাকালেন খোদ মধুমিতা সরকার।
আন্তর্জাতিক নারীদিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছোট্ট ভিডিও পোস্ট করেছেন মধুমিতা। ভিডিওর শুরু থেকেই তাঁর উদ্দেশে করা একের পর এক কদর্য কমেন্ট পড়ে চলেছেন তিনি নিজেই। কমেন্ট পড়া শেষ করে মধুমিতার প্রথম কথা, ‘সারা বছর এমন সুন্দর সুন্দর কমেন্টের বন্যায় ভরিয়ে দিয়ে এই একটা দিন নারীদিবসের শুভেচ্ছা না জানালেই নয়?’
নারীদিবসে মধুমিতার মুখে উঠে আসে মেয়েদের রোজকার সমস্যার কথা, পরিস্থিতির কথা, বাস্তবতার কথা। অভিনেত্রী বলতে থাকেন, ‘নারীদের সম্মান তো আপনারা এমনিতেও দেন না, আমার মনে হয় এই দিবসটা কেবল লন্ডন, আমেরিকাতেই উদযাপন করা উচিত। এখানে তো ছেলেদের আর মেয়েদের এক চোখে দেখাই হয় না। তাহলে আলাদা করে নারীদের সম্মান দেওয়ার ব্যাপার আসে কোথা থেকে? একটা ছেলে যদি খালি গায়ে বা স্যান্ডো গেঞ্জি পড়ে ছবি পোস্ট করে তাহলে তাতে কোনও দোষ নেই। কিন্তু একটা মেয়ে কাজের জন্য যদি শাড়ি বা চুড়িদার ছাড়া মিনি স্কার্ট বা হট প্যান্ট পড়েন, তখন সে হয়ে যায় ‘নটি আমেরিকা’র আর্টিস্ট। তাই না?’
কেবল মধুমিতা নয়, গোটা বছরই তো সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্যের শিকার হন সাধারণ মহিলারা, বাদ যান না তারকারাও। মধুমিতা কিন্তু বলছেন, ‘আমার কিন্তু তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। আগে ঠিক করে মেয়েদের সম্মানটা দিতে শিখুন। তারপর তো মেয়েরা এমনিতেই খুশি হয়ে যাবে।’
মধুমিতার বক্তব্যের শেষে স্ক্রিনে ফুটে ওঠে হ্যাপি ওমেন’স ডে। তারপর হ্যাপি কথাটির পাশে ফুটে ওঠে একটা প্রশ্নচিহ্ন।
একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মেয়েরা কি সত্যিই খুশি? প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেলেন মধুমিতা।