অভিনেত্রী হিসাবে ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছেন ঋতাভরী। এবার সুরের দুনিয়ায় হাতেখড়ি হল তাঁর। রবিবার নিজের প্রথম মিউজিক ভিডিও প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। কেবল অভিনয় নয়, ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকা 'দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ' গানের গলাটিও ঋতাভরীরই। গোটা ভিডিও জুড়ে ছোটবেলার স্কুল হরিয়ানা বিদ্যা মন্দিরের আনাচে কানাচে স্মৃতি হাতড়ালেন নায়িকা। মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দের সঙ্গে আড্ডায় উঠে এল অভিনেত্রীর ছোটবেলার টুকরো টুকরো ঘটনা।
বাউল ঘরানার গানের সঙ্গে কেমন করে স্কুলজীবনের যোগসূত্র খুঁজে পেলেন? ঋতাভরী বলছেন, 'ছোটবেলা থেকেই এই গানটা আমার ভীষণ প্রিয়। ছোটবেলায় আমরা যেভাবে জীবনটাকে ভাবি, স্বপ্ন দেখি, বড় হয়ে অনেকটাই বদলে যায় সবটা। মন থেকে যাকে চায় মানুষ, সবসময় যে তাকে পাওয়া যায় এমনটা হয় না। এই গানটা গাইব আগেই মনস্থির করেছিলাম। আমার দিদি চিত্রাঙ্গদার মাথায় প্রথম এই ভাবনাটা আসে। আমি আজ যেখানে দাঁড়িয়ে তার পিছনে আমার স্কুলের অবদান তো রয়েছেই। 'দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ' গানের অনেক ভার্সান আছে। আমার ইচ্ছা ছিল অন্যরকম কিছু ভাবনা নিয়ে মিউজিক ভিডিওটা বানানো।'
গোটা ভিডিও শ্যুটিংটাই হয়েছে ঋতাভরীর ছোটবেলার স্কুলে। তাই বোধহয় নায়িকার কললিস্ট ভরে উঠছে নস্টালজিক ফোনকলে। বন্ধু থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, পুরনো স্কুলে ভিডিও স্মৃতি উস্কে দিয়েছে সবারই। বাদ জাননি খোদ নায়িকাও। বলছেন, ''স্কুলের বন্ধুরাই এখনও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। স্কুলে শ্রদ্ধা, পারমিতা আর আমি ছিলাম থ্রি-মাস্কেটিয়ার্স। আমি শীতের ছুটিটাও কাটাচ্ছি আমার ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গেই।''
স্কুলের সবচেয়ে মজার স্মৃতি বলতে কী মনে পড়ে নতুন গায়িকার? ''আমরা প্রতি মাসের ২৩ তারিখ হজমোলা পার্টি করতাম। লাস্ট বেঞ্চে বসে ভাগ করে হজমোলা খাওয়া..'' হেসে উঠলেন ঋতাভরী। একবার নাকি কম্পিউটার ক্লাসে গল্প করার জন্য ঋতাভরী সমেত বন্ধুদের গোটা বেঞ্চকে বাইরে বার করে দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। তারপর? ''তারপর সবাই বেরিয়ে গেল। আমি নজর এড়িয়ে সামনের বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়েছিলাম। টিচার বুঝতেই পারেননি। আর বাইরে দাঁড়ানো বন্ধুদের তাতে কী রাগ! যেন আমায় মেরেই ফেলবে।'' ঋতাভরী পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই ছোটবেলায়।
ভিডিওতে ছোট্ট ঋতাভরী আর তাঁর বন্ধুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তাঁরই স্কুলের ২ ছাত্রী। 'দ্য আইডিয়াল স্কুল ফর ডেফ অ্যান্ড ডাম'-এর ২ পড়ুয়ার এই প্রথম অভিনয়ে হাতেখড়ি। ঋতাভরী বলছেন,''ওরা কেউ কথা বলতে পারে না। কিন্তু কী সাবলীল অভিনয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে সবটা। সবাই আমায় জিজ্ঞাসা করছে ওদের কথা। আমিও ভীষণ খুশি। আর আমি খুব চেয়েছিলাম নিজেকে মেলে ধরতে। এই ভিডিওটায় আমি অভিনয় করতে চাইনি।''
সত্যি কাঁচা সোনার সন্ধান না পেলেও সোনায় মোড়া ছোটবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ঋতাভরীর ''দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা''।